গত ৪ এপ্রিল সাংসদ আসলামুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা ১৪ আসন শূন্য হয়েছে। আগামী দিনে এই আসনে নৌকার কান্ডারী কে হবেন সে বিষয়ে তৃনমূলে চলছে আলোচনা। শোকের আবহে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নানা সামাজিক ও ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
ঢাকার মিরপুর, শাহআলী ও দারুস সালাম থানা, রূপনগর থানার আংশিক এবং সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ আসন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড এই আসনের অন্তর্ভুক্ত। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব এলাকা ঢাকা-১১ আসনভুক্ত ছিল। ২০০৮ সালে সীমানা পুনর্বিন্যাস করে ঢাকা-১১ ভেঙে ঢাকা-১৪, ১৫ ও ১৬ আসন গঠন করা হয়। ওই বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রথমবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আসলামুল হক। প্রথমবার প্রার্থী হয়েই এস এ খালেককে পরাজিত করেন তিনি। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন আসলাম। গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। এলাকায় তার একক নেতৃত্ব ও কর্মী বাহিনীর কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তিনি ছিলেন অনেকটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাই তার অকাল প্রয়াণে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া শূন্যতায় অনেকেই নৌকার কান্ডারী হতে চাইছেন।
আলোচনায় আছেন আসলামুল হকের স্ত্রী মাকসুদা হক এবং আসলামুল হকের বড় ভাই, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মফিজুল হক বেবু।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ও এ বি এম মাজহারুল আনাম আছেন আলোচনায়।
সহযোগী সংগঠন থেকে আলোচনায় আছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি মোবাশ্বের চৌধুরী, যুব মহিলা লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন।
থানা আওয়ামী লীগ থেকে আলোচনায় আছেন মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হানিফ, শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রবীণ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু। সাবেক কাউন্সিলর ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ঢাকা ১৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে পোস্ট দিয়েছেন, যদিও তার বিরুদ্ধে বিএনপি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে।
এছাড়া গত জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সংকেত পেলে মাঠে নামবেন বলে উচ্চমহলে গুঞ্জন রয়েছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, করোনার কারণে সকল নির্বাচন স্থগিত থাকায় এবং শোকের আবহ না কাটায় এখনো তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামেননি। এলাকায় বর্তমানে শক্তিশালী একক প্রার্থীর অভাবে আশেপাশের কয়েকটি আসনের প্রার্থীরাও এই আসনে ভিড় জমাচ্ছেন। আবার অনেকে নিজের নাম মাঠে না এনে নিজস্ব মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করার পরিকল্পনায় আছেন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই করোনাকালে নানা মানবিক কর্মসূচি নিয়ে এলাকার মানুষের পাশে আছেন।