মহামারি করোনায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ও আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। লাশের সারির দীর্ঘ হলেও ভাইরাসের হারিয়ে যাওয়া প্রাণ সৎকার করার অভাবে প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে দেওয়ার বহু চেষ্টা করছে বহু দেশ। আগের চেয়ে উচ্চ হারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে খুব দ্রুত। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ কোটি ২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪২ লাখ ৫৮ হাজার।
বুধবার (৪ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ হাজার ৮৩৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে ২ হাজার ২০০-র বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫২ জনে।
এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাফে বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ২ লাখ ৩১ হাজার ৭০৪ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৩৮১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৬০ লাখ ৪৮ হাজার ৬১১ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৬ লাখ ৩০ হাজার ৪৯৩ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৯৮ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৯০০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৮ হাজার ৮৮৯ জনের।
এদিকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৩৮ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৫৭২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৯৯ লাখ ৮৬ হাজার ৭৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯৭ জনের।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৬১ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৫৬৬ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯৬৫ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৯ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৩২ জন, রাশিয়ায় ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৫ জন, যুক্তরাজ্যে ৫৯ লাখ ২৩ হাজার ৮২০ জন, ইতালিতে ৪৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭৪ জন, তুরস্কে ৫৭ লাখ ৯৫ হাজার ৬৬৫ জন, স্পেনে ৪৫ লাখ ২৩ হাজার ৩১০ জন, জার্মানিতে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ৩২৬ জন এবং মেক্সিকোতে ২৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ জন, রাশিয়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৯২৫ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ২৯ হাজার ৮৮১ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ১১৫ জন, তুরস্কে ৫১ হাজার ৬৪৫ জন, স্পেনে ৮১ হাজার ৭৭৩ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ২০৮ জন এবং মেক্সিকোতে ২ লাখ ৪১ হাজার ২৭৯ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।