১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্মের পর থেকে বহু রক্তাক্ত পথ অতিক্রম করে আজকের আওয়ামী লীগ। সংগঠনটির লাখো নেতাকর্মীর আত্মবলিদানের ফসল আজকের বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে একের পর এক যড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী সকল গোষ্ঠীকে মোকাবিলা করেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার গভীর দেশপ্রেম, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও আত্মনিবেদনের ফলেই আমরা এখন মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছি এবং একইসাথে সমগ্র বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিভাত হতে সক্ষম হয়েছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্লান্তিহীন লড়াইকে থামিয়ে দেবার চেষ্টা হয়েছে বহুবার। ১৯ বার তাঁকে হত্যাচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে তিনি অবিশ্বাস্যভাবে মৃত্যুদুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন এবং দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে এই বাংলার মানুষের কল্যাণে নিজেকে সমর্পন করেছেন।
৭৫-এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করলেও বিদেশে অবস্থানের কারণে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের কোনো উত্তরাধিকার রাখতে চায়নি। যেকারণে তাঁর নিষ্পাপ শিশুপুত্র শেখ রাসেলকেও তারা রেহাই দেয়নি।
২১ আগস্ট ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টেরই ধারাবাহিকতা। ২০০৪ সালের এ দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ কলঙ্কময় দিন। দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নেতৃত্বশূন্য করার জঘন্য অপচেষ্টার দিন। বাঙালি জাতির জীবনে আরেক মর্মন্তুদ অধ্যায় রচনার দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে আজকের প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড ছুড়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে তাকে বাঁচাতে পাড়লেও মহিলা লীগের তৎকালীন সভাপতি আইভী রহমান, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষীসহ ২৪ জন নেতাকর্মী এই ভয়াবহ, নৃশংস, নিষ্ঠুর-নির্মম গ্রেনেড হামলায় মারা যান। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার দুই কান ও চোখ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপূরণীয় ক্ষতি হয় তার শ্রবণশক্তির। অলৌকিকভাবে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা তখন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা। বিএনপি সরকারের সন্ত্রাস-দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সেদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা বিকাল পাঁচটার দিকে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। বুলেটপ্রুফ গাড়ি থেকে নেমে নিরাপত্তাকর্মী ও দলীয় নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত অবস্থায় তিনি অস্থায়ী মঞ্চে ওঠেন।
সমাবেশে শেখ হাসিনা বক্তব্য শুরু করেন ৫টা ২ মিনিটে। ২০ মিনিটের বক্তব্য শেষে ৫টা ২২ মিনিটে ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে মাইক ছেড়ে পিছিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় একজন সাংবাদিক তাকে ছবির জন্য একটি পোজ দিতে অনুরোধ করেন। তখন শেখ হাসিনা আবারও ঘুরে দাঁড়ান। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই দক্ষিণ দিক থেকে তাকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। গ্রেনেডটি ট্রাকের বাঁ পাশে পড়ে বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেখ হাসিনা ট্রাকের ওপর বসে পড়েন।
তার সঙ্গে থাকা অন্য নেতারা এ সময় মানবঢাল তৈরি করে তাকে ঘিরে ফেলেন। প্রথম গ্রেনেড হামলার মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ট্রাক লক্ষ্য করে একই দিক থেকে পর পর আরও দুটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। বিকাল ৫টা ২২ মিনিট থেকে এক-দেড় মিনিটের ব্যবধানে ১৩টি বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। তখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর (অব.) শোয়েব, ব্যক্তিগত স্টাফ নজীব আহমেদসহ দেহরক্ষীরা শেখ হাসিনাকে ধরে ট্রাক থেকে দ্রুত নামিয়ে তাঁর গাড়িতে তুলে দেন।
সিনিয়র ফটোসাংবাদিক এস এম গোর্কি সেদিন শেখ হাসিনার ভালো ছবি পাননি বলে তাকে আবারও পোজ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তার অনুরোধে সাড়া দিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা ফের ডায়াসে ঘুরে দাঁড়ান। এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার একাধিক বক্তব্যে নিজেই উল্লেখ করেছেন। একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে আমাকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু গ্রেনেড গায়ে লাগলে কী হতো বলা যায় না।’ তিনি ফটোসাংবাদিক এস এম গোর্কির নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘গোর্কি মনে হয় ভালো ছবি পায় নাই। আমি বক্তব্য শেষ করে যাওয়ার জন্য ঘুরে এক পা বাড়িয়েছি। তখন গোর্কি আমাকে বলে, ‘আপা, ছবি পাই নাই, একটু দাঁড়ান।’ আমি আবারও ঘুরে দাঁড়াই। আর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ। গ্রেনেড যে জায়গায় পড়েছে সেদিক দিয়েই আমার নামার কথা ছিল। কিন্তু ছবি তোলার সুযোগ দিতে ঘুরে দাঁড়ানোয় আমি আবারও ডায়াসে দাঁড়াই।’
প্রথম দফায় হামলার পর স্টেডিয়ামের দিক হয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। দলীয় সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন ঘটনাস্থল ত্যাগ করছিলেন, তখনও একই দিক থেকে কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে গ্রেনেড এসে ঘটনাস্থলে বিস্ফোরিত হতে থাকে। একইসঙ্গে চলছিল তার গাড়ি লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ। এসব গুলি ও গ্রেনেড ঠিক কোথা থেকে ছোড়া হচ্ছিল, তা বোঝা না গেলেও বেশ পরিকল্পিতভাবে যে হামলা হয়েছে, তা পরে বোঝা যায়। তাঁর (শেখ হাসিনা) বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে গেলে তাঁকে বহনকারী মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িটির সামনে-পেছনে গ্রেনেড ও গুলির আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন দেখা যায়।
ঘটনার পর ওই জায়গাটি যেন হয়ে পড়েছিল ‘কারবালা প্রান্তর’। বিস্ফোরণের শব্দ, আহতদের চিৎকার-আহাজারি, রক্তাক্ত নেতাকর্মীদের ছুটোছুটিতে পুরো এলাকা বিভীষিকাময় হয়ে ওঠে। চারদিকে ছোপ ছোপ রক্ত আর মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ। বিচ্ছিন্নভাবে পড়েছিল পায়ের জুতা, সেগুলো ছিল রক্তে লাল। দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নেওয়ার পর ট্রাক থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় নামতে থাকেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। যারা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন, তাদের ধরে নামানো হয়। কী ঘটছে কিছুই বুঝতে না পেরে অনেক নেতাকর্মী এ সময় ছুটে দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে যান।
আহতদের মধ্যেও অনেককে ধরে ভেতরে নেওয়া হয়। অনেককে দেখা যায়, পথে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটোছুটি করতে। গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, আহতদের হাসপাতালে পাঠাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় দলীয় নেতাকর্মীদের। এ অবস্থায়ই রিকশা, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, বেবিট্যাক্সি, এমনকি রিকশা ভ্যানে করেও আহতদের প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় অনেককে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থেকে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাতে দেখা যায়। দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আহতদের সহায়তা ও হাসপাতালে নেওয়ার কাজে এগিয়ে এলেও পুলিশ সাহায্য করেনি।
বিস্ফোরণের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে আওয়ামী লীগ কর্মীরা সেদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘটনার অনেক স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তখন পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে থাকে। আহতদের হাসপাতালে নিতে পুলিশ সাহায্য তো করেইনি, উল্টো বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের নির্বিচারে লাঠিপেটা করে এবং টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে।
চারদিকে যানবাহনে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। রাস্তায় পড়ে আছে জমাটবাঁধা রক্ত, হতাহতদের শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া নাড়িভুঁড়ি, রক্তাক্ত দলীয় পতাকা-ব্যানার, আর পরিত্যক্ত অসংখ্য জুতা- স্যান্ডেল। দলীয় কার্যালয়ের সামনে পেট্রল পাম্পের গলির মাথায় পড়ে আছে একটি তরতাজা গ্রেনেড, অদূরে আরেকটি। আহতদের দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে বের করে ভ্যানে ওঠানো হচ্ছিল। পাশের আরেকটি দোকান থেকে বের করে গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল আহত আরও কয়েকজনকে। উদ্ধারকারীরাও আহতদের শরীর থেকে বের হওয়া রক্তে ভিজে একাকার। ফলে পাশে দাঁড়িয়ে থেকেও ঠিক শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না কে আহত আর কে উদ্ধারকর্মী। আহতদের চিৎকার, উদ্ধারকর্মীদের হৈচৈ, বিক্ষোভকারীদের স্লোগানের শব্দে একাকার হয়ে যাচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্স আর পুলিশের গাড়ির সাইরেনের শব্দ।
উদ্ধার অভিযান চলাকালে সন্ধ্যা ৬টা ২৬ মিনিটে প্রচণ্ড শব্দে আরেকটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়, পুলিশের উপস্থিতিতেই সিটি ভবনের পাশের গলিতে। সভার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত ট্রাকের ওপর, এর পাশে, সমাবেশস্থলে এসব বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর পর ধোঁয়ার কুণ্ডলী, মানুষের চিৎকার, ছুটোছুটিতে প্রাণবন্ত একটি সমাবেশের চেহারাই পাল্টে যায়। আওয়ামী লীগ কার্যালয় আর রমনা ভবনের সড়কে বিভিন্ন জায়গা ভেসে যেতে থাকে রক্তের স্রোতে। ছেঁড়া স্যান্ডেল, রক্ত, পড়ে থাকা ব্যানার, পতাকার সঙ্গে এখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল নারী-পুরুষের দেহ। কেউ নিথর-স্তব্ধ, কেউবা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
সেদিন ১৬ জন মারা যান। পরে আরও কয়েকজন মিলিয়ে ওই হামলার ঘটনায় মোট ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই আহত হন। শ্রদ্ধেয় আইভী রহমানসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
গ্রেনেড হামলা থেকে কোনোভাবে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যেন প্রাণ নিয়ে ফিরতে না পারেন, তার সব চেষ্টায়ই করেছিল হামলাকারীরা। তাঁর গাড়ির কাঁচে কমপক্ষে সাতটি বুলেটের আঘাতের দাগ, গ্রেনেড ছুঁড়ে মারার চিহ্ন এবং বুলেটের আঘাতে পাংচার হয়ে যাওয়া গাড়ির দুটি চাকা সে কথাই প্রমাণ করে। এটি ছিল একেবারে ঠান্ডামাথায় হত্যার পরিকল্পনা। তিন স্তরের বুলেট নিরোধক ব্যবস্থাসম্পন্ন মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িটিই সেদিন শেখ হাসিনার প্রাণ বাঁচিয়েছে । গ্রেনেড আক্রমণ ব্যর্থ হলে নেত্রীকে হত্যার বিকল্প পন্থা হিসেবে বন্দুকধারীদের তৈরি রাখা হয়।
আর এই বন্দুকধারীরাই খুব হিসাব কষে নেত্রীর গাড়ির কাঁচে গুলি চালায়। গাড়িতে ওঠানোর সময় নেত্রীকে ঘেরাও করে রাখা আওয়ামী সভাপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী মাহবুব স্পটেই মারা যান। গুলি বুলেটপ্রুফ কাঁচ ভেদ করতে ব্যর্থ হলে তারা গাড়ি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছু্ঁড়ে মারে। কিন্তু এই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। সব শেষে গাড়ির চাকা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে থামানোর চেষ্টা করা হয়। এ অবস্থায় গুলির আঘাতে গাড়ির বাঁ পাশের সামনের ও পেছনের দুটি চাকা পুরোপুরি পাংচার হয়ে গেলেও চালক অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই গাড়িটি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ধানমন্ডির সুধা সদনে নিয়ে যান।
সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মদদে ও পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক ঘটনা। স্বাধীনতা গণতন্ত্রবিরোধী জঙ্গিবাদী মানসিকতার এবং হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী যে শক্তিটি তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তারা জাতির কাছে ক্ষমা পেতে পারে না। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এদেশের সকল মানুষের কাছে এটি এক বিস্ময়কর বেদনার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।