আজ বিশ্ব নদী দিবস। নদী রক্ষায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে নদী রক্ষায় সচেতন করা। মানুষকে জানানো, নদী হচ্ছে পৃথিবীর ধমনীর মতো। এর প্রবাহমনতাই সত্যিকার অর্থে আমাদের জীবন রক্ষাকারী। এবারে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘মানুষের জন্য নদী’।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। আমাদের দেশে নদী ও মানুষের জীবন অবিচ্ছেদ্য। সে কারণেই আমাদের মৃতপ্রায় নদী নিয়ে পরিবেশবাদীসহ সাধারণ মানুষের উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। যদিও নদী রক্ষার তত্পরতা গোটা পৃথিবী জুড়েই দেখা যায়। নদী সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার পালন করা হচ্ছে বিশ্ব নদী দিবস।
বাংলাদেশের নদী রক্ষায় নিবেদিত ৭০টির বেশি পরিবেশবাদী সংগঠন, উদ্যোগ ও আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত ‘বিশ্ব নদী দিবস উদ্যাপন পরিষদ, বাংলাদেশের উদ্যোগে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় বিশ্ব নদী দিবস-২০২১ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ‘অনলাইন মার্চ ফর রিভারস’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অনলাইন ‘মার্চ ফর রিভারস’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর। পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে দিবসের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পরিষদের সদস্য সচিব ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।
১৯৮০ সাল থেকে বিশ্ব নদী দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। যার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিল বিসি রিভারস ডে পালন দিয়ে। ১৯৮০ সালে কানাডার খ্যাতনামা নদীবিষয়ক আইনজীবী মার্ক অ্যাঞ্জেলো দিনটি ‘নদী দিবস’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিসি রিভারস ডে পালনের সাফল্যের হাত ধরেই তা আন্তর্জাতিক রূপ পায়।
২০০৫ সালে জাতিসংঘ নদী রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরি করতে ‘জীবনের জন্য জল দশক’ ঘোষণা করে। সে সময়ই জাতিসংঘ দিবসটি অনুসমর্থন করে। এরপর থেকেই জাতিসংঘের বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা দিবসটি পালন করছে, যা দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে এ দিবস পালিত হচ্ছে। দূষণে-দখলে মৃতপ্রায় নদী বাঁচাতে রবিবার দেশের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নদ-নদী রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। ২৫ বছর মেয়াদি ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণও শুরু হয়েছে।