বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের সিংহাসন টলোমলো করছে। তাদের পতন অত্যাসন্ন। এই পতন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী টিভিতে কথায় কথায় চোখের পানি ফেলেন। আসলে সেটা হচ্ছে তার মায়াকান্না বা টিয়ার্স অব ক্রোকোডাইল। অন্যের কষ্টে তিনি অশ্রু ঝরান না। আসলে তার ওপর ভর করছে ইয়াহিয়া ও টিক্কা খানের আত্মা। তা না হলে তিনি অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলামকে গ্রেফতার করতেন না। ১৪ ডিসেম্বর আমরা বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি। আগামীতে আমরা ১৪ ডিসেম্বর ‘বুদ্ধিজীবী নির্যাতন দিবস’ পালন করবো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন যে পরিবারগুলো গুম হয়েছে, তাদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন, নিজেরা স্টেটমেন্ট লিখেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্টেটমেন্ট লিখে বলছে যে, এখানে সই করো? এটা কী? বলা হচ্ছে যে, আমার ছেলে বা আমার স্বামী সে নিজে নিজেই হারিয়ে গেছে। পুলিশ লিখে নিয়ে যাচ্ছে আর ওখানে (স্টেটমেন্টে) সই করতে বলছে পরিবারকে। পুলিশের হুমকির মুখে কজন টিকবে? অনেকে প্রতিবাদ করেছে যে, না আমরা জানি, কিভাবে তাদেরকে গুম করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসলে তো কোনো কিছু আটকিয়ে রাখা যায় না। আটকিয়ে রাখায় যায় না বলেই বিএনপি ব্যস্ত থাক তাজমেরী এস এ ইসলামকে নিয়ে, বিএনপি ব্যস্ত থাক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে। আর ফাঁক দিয়ে আমরা (সরকার) এই কাজগুলো করি। কারণ চারিদিকে আজকে ধিক্কার উঠেছে, চারিদিকে আজকে সমালোচনা ঝড় বইছে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। পতন যখন অত্যাসন্ন হয় সেই পতনকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, এই প্রতিবাদী মানববন্ধন থেকে আমি এই মুহূর্তে তাজমেরী ইসলামের মুক্তি দাবি করছি। তাকে মুক্তি দিন। অন্যথায় এটাই অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মতো আন্দোলনের এমন দাবানল তৈরি হবে সেই দাবানলে প্রধানমন্ত্রী আপনার র্যাব, আপনার পুলিশ, আপনাকে যারা পাহারা দেয় কেউ আর আপনাকে পাহারা দেবে না। আপনার পতন অবশ্যম্ভাবী হবেই।
ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদাদলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আনিসুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম মতিনুর রহমান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমজাদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।