ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসায় হল সুপারের বাসভবন ভেঙে ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি

রাজধানীর বকশীবাজারে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলীয়ার হল সুপারের বাসভবন ভেঙে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (০৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসাই আলীয়া সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুছ ছবুর মাতবর। লিখিত বক্তব্যে তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হচ্ছে ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের আর্থিক দুর্নীতি দুদকের মাধ্যমে সুষ্ঠু অনুসন্ধান করে বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে এবং চাকরিচ্যুত করতে হবে। মাদরাসার হলসুপার ও সহ-হলসুপারের বাসভবন ভেঙে ফেলার ওয়ার্ক অর্ডার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রদের নামে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারা অধিদপ্তর ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক দখলকৃত আলিয়া মাদ্রাসার দখল করা জমি আগামী ৩ মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আরও আবাসিক হল নির্মাণ করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র ও শিক্ষা জোনখ্যাত বকশীবাজারে অবস্থিত ২৫০ বছরের পুরোনো দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকা। স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু সংখ্যক কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পড়েছে মাদ্রাসাটি।

তারা ‘মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন’ তৈরি করার নামে মাদ্রাসার একমাত্র ছাত্রাবাস আল্লামা কাশগরী হলের সুপার ও সহ-সুপারের বাস ভবন ভেঙে ফেলার জন্য দরপত্র দিয়েছে অতঃপর ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) ইস্যু করেছে। আমরা প্রাক্তন ছাত্ররাসহ আলীয়া মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন থেকেই কুচক্রী মহলের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।

আমরা এই দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্ররা কুচক্রী মহলের এমন উদ্যোগকে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকাকে ধংস করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র মনে করছি। আমরা এ উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ইতোমধ্যে ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ হল খুলে দিতে বাধ্য হয়। হোস্টেল সুপার ও সহ-সুপারকে তাদের বাসভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

মাদরাসার একাডেমিক প্রধান মাওলানা প্রফেসর আবদুল মান্নান সাহেব এবং হোস্টেল সুপার মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবকে ওএসডি করা হয়েছে। আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। হোস্টেল সুপার এবং হোস্টেল সহসুপারের বাসভবন বিক্রির দরপত্র আহ্বান করে ইতোমধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আবদুছ ছবুরকে আহ্বায়ক ও মুনুরুল ইসলাম আকাশকে সদস্য সচিব করে আলীয়া মাদ্রাসা সুরক্ষা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আলীয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র সাগর আহমেদ শাহীন, আ ন ম নুরুন্নবী জনি, লতিফুল বারী রাকিব, শাহদাত হোসেন, ফারুক হেসাইন চৌধুরী শাওনসহ অনেকে।