দেশে এখন ‘হাইব্রিড রেজিমের ক্ষমতায় থাকার নির্বাচন’ হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এখন নির্বাচনও হয় আবার জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না। এটা থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি করতে হবে।
রোববার (২০মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কেএম ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের মধ্যে বাস করছে। মানুষের অধিকারগুলোকে সম্পূর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন আইন তৈরি করা হচ্ছে। ভিন্নমত প্রকাশ করার পুরো স্বাধীনতাকে খর্ব করে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের লেবাস লাগিয়ে দিয়ে ভিন্ন মোড়কে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা নির্বাচনও করে, যে নির্বাচনকে বলা হচ্ছে হাইব্রিড রেজিমের ক্ষমতায় থাকার নির্বাচন। নির্বাচনও করবে আবার দেখা যাবে জনগণ সেই নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। ’
তিনি বলেন,‘আজকে আমাদের সামনে কঠিন সময়। এই সময়ে গণতন্ত্রের নেত্রী, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ তাকে চিকিৎসা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। তাকে দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। আজকে আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা।
তিনি বলেন, ওবায়দুর রহমান সাহেব-শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেব ছিলেন অনলবর্ষী বক্তা। শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেবের বয়স হয়ে গেছে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তৃতা করতে পারতেন। তার বক্তৃতার মধ্যে আগুন জ্বলে উঠত। একইভাবে ওবায়দুর রহমান সাহেবও সেইভাবে বক্তৃতা করতেন। উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতির যে কয়জন সামনের সারিতে ছিলেন তার মধ্যে অবশ্যই কেএম ওবায়দুর রহমান এবং শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেব ছিলেন। তাদের যুগটা ছিল অন্যরকম। তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং তাদের সংগ্রামের মূল্য ছিল অনেক বেশি।
তিনি বলেন, কে এম ওবায়দুর রহমান-শাহ মোয়াজ্জেম সাহেবরা বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান যখন সমস্ত রাজনৈতিক দল বাতিল করে বাকশাল কায়েমের সিদ্ধান্ত নিলেন তখন যে কয়েকজন মানুষ গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে তারা ভিন্ন অবস্থান নিয়েছিলেন এই দুজনও তাদের মধ্যে ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাটের পরিচালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেএম ওবায়দুর রহমানের কন্যা শামা ওবায়েদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্র নেতা নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ।