প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আইন কানুন যেটা আছে, সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে বাধ্য। সংসদ নির্বাচনে প্রচণ্ড সহিংসতা হলে আমরা পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করে দেবো, আমাদের সেই ক্ষমতা আছে।
সোমবার (১৩ জুন) নির্বাচন ভবনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনীকালীন সরকার, বর্তমান যে সরকার তার ধরন পাল্টে যাবে। তখন পলিসি নিয়ে উনারা কাজ করবেন না। পৃথিবীর সব দেশেই এটা আছে। নির্বাচনের কাজে আমাদের সহায়তা করতে হবে।
তিনি বলেন, টিআইবির প্রতিনিধি দলকে আমরা বলেছি, আইন কানুন যেটা আছে সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে বাধ্য। সব নির্বাচনে আমরা সরকারের কাছে সহয়তাগুলো চাইবো এবং অবশ্যই সরকার সে সহযোগিতাগুলো করবে বলে আশা করি। সহায়তামূলত পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রশাসন কেন্দ্রিক আর ডিফেন্স মিনিস্ট্রি। অন্য কোনো মিনিস্ট্রি নিয়ে আমাদের মাথাঘামনোর কোনো দরকার নেই। জনপ্রশাসন যেহেতু জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে হেন্ডেল করে, তারপর পুলিশ প্রশাসনকে হেন্ডেল করে হোম মিনিস্ট্রি, আর সশস্ত্র বাহিনীকে যদি ইনভলব করা হয়, তাহলে ডিফেন্স মিনিস্ট্রি লাগবে।
সিইসি বলেন, একই কথা বারবার বলেছি অসংখ্যবার, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হওয়া খুবই প্রয়োজন। যেভাবেই হোক যদি মূল বিরোধী দল নির্বাচনে না আসে, তাহলে নির্বাচন স্বচ্ছ হোক, অস্বচ্ছ হোক, যাই হোক ওটার কিন্তু গুরুত্ব, গ্রহণযোগ্যতা অনেক কমে যাবে। কারণ ডেমোক্রেসির মূল কথাই হচ্ছে পজিশন এবং অপজিশন। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে যেটা দেখি সেটা কিন্তু গভমেন্ট নয়। তারপর জয়ী হয়ে যেটা পার্লামেন্টে আসে দ্যাট ইজ পার্ট অব দ্য গভমেন্ট, লেজিসলেটার। লেজিসলেটার কিন্তু বিরোধী দলে যারা থাকেন তারা ট্রেজারি বেঞ্চ। তাদের কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা। এই সমালোচনার মাধ্যমেই কিন্তু এক ধরনের জবাবদিহিতা গড়ে ওঠে এবং সতর্কতা হয়। এজন্য আমরা চাই নির্বাচনটা অংশহগ্রহণমূলক হোক।
তিনি আরও বলেন, উনাদের বলেছি, আপনারা যারা পলিটিক্স করেন না, পলিটিক্সের ঊর্ধ্বে একটা অবস্থান আপনাদের আছে। দলগুলো প্রতিদিন যে আক্রমণাত্মক কমেন্টগুলো দিচ্ছে, সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে যদি টেবিলে মুখোমুখি করা যায়, তাহলে আলোচনা হবে গঠনমূলক। টেবিলের বাইরে গিয়ে যদি ধারাবাহিকভাবে আক্রমণাত্মক বক্তব্য পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে দেয়, তাহলে কিন্তু দুরত্ব কমবে না। কারণ আমরা চাচ্ছি নির্বাচনে সব পার্টি অংশগ্রহণ করুক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। অপজিশন থেকে যে দাবিগুলো করা হচ্ছে এগুলো নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেটা কিন্তু আমাদের বিষয় নয়। এটা সাংবিধানিক বিষয়। পলিটিক্যাল লিডাররা যদি একমত হন তারা দেখবেন। আমার কাছে মনে হয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বর্তমানে যে আইন আছে, সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচনের সময় তার সঙ্গে আমাদের ইন্টারঅ্যাকশন বেড়ে যাবে।
এর আগে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিইসিসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান সিইসি।