ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে দেশটিতে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা।
জাতিসংঘের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আমন্ত্রণে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং ইউক্রেনীয় নেতার সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার লভিভে থাকবেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।’
ডুজারিক আরও বলেছেন, বৈঠকের পর এই তিনজন (গুতেরেস, এরদোয়ান এবং জেলেনস্কি) পরদিন শুক্রবার কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসার বন্দর পরিদর্শন করবেন। জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির অধীনে সম্প্রতি এই বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি আবারও শুরু হয়েছে।
মূলত গত ২২ জুলাই স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের বিভিন্ন গুদামে আটকে থাকা আড়াই কোটি টন গম ও ভুট্টার আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছানোর পথ খুলে যায়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্য বহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সেজন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আর সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে জাতিসংঘ, রাশিয়া ও তুরস্ক।
ডুজারিক বলেছেন, গুতেরেস পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভে জেলেনস্কির সাথে দেখা করবেন এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন। একইসঙ্গে সেখানে তিনি ‘সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা’ নিয়েও আলোচনা করবেন।
ইউক্রেন এবং রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে হামলার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের পরপরই দখল করেছিল রাশিয়ান বাহিনী। তবে এই স্থাপনাটি এখনও ইউক্রেনীয় প্রযুক্তিবিদদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে।
জাতিসংঘ বলেছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের কিয়েভ থেকে জাপোরিঝিয়া সফরের সুবিধা করে দিতে তারা সাহায্য করতে পারে। তবে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনের রাজধানীর মধ্য দিয়ে যাওয়া যে কারও জন্য খুব বিপজ্জনক।
ইউক্রেন সফরের পর আগামী শনিবার গুতেরেস ইস্তাম্বুলের যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। এই সমন্বয় কেন্দ্রটি রাশিয়ান, ইউক্রেনীয়, তুর্কি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এবং তারা ইউক্রেনের শস্য ও সারের রপ্তানির তদারকি করছে।