আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভবিষ্যতের পথ চলায় দেশকে একটি মানবিক, সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। এবং এই কাজ সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সবাইকে এজন্য ব্রতী হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে যদি মানবিকতার বিকাশ না ঘটে, নতুন প্রজন্ম যদি গুরুজনদের শ্রদ্ধা করতে না জানে, যদি নতুন প্রজন্ম উন্নতির সাথে সাথে পিতা-মাতাকে বোঝা মনে করে, তাহলে তো মানবিক রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভবপর নয়। সেজন্য আমি মনে করি এটি নিয়ে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। সবাই যদি এটি নিয়ে ভাবে তাহলে অবশ্যই সমাজ এগিয়ে যাবে।
বুধবার সকালে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিক্স আয়োজিত ‘তারুণ্যে উদ্দীপ্ত বরেণ্য প্রবীণ বিদগ্ধজন ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ সংবর্ধনাগ্রন্থ’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. মো. আবদুল করিমের সভাপতিত্বে ও অর্থনীতিবিদ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, অধ্যাপক শফি আহমদ, অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবির, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ রচিত গান বাজিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়।
ড. খলীকুজ্জামান সংবর্ধনাগ্রন্থের প্রকাশক পালক পাবলিশার্স এবং সম্পাদকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ড. খলীকুজ্জামানের মতো গুণীজনদের কাছ থেকে নতুন প্রজন্ম, সমাজের অনেক কিছু শেখার আছে। সমাজকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় গুণী মানুষদের সম্মান করতে হয়। যে সমাজ গুণী মানুষকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে না, সেই সমাজে গুণী মানুষ তৈরি হয় না। ড. খলীকুজ্জামানের বয়স ৮২ বছর। গত ১৪-১৫ বছর ধরে কোনো পরিবর্তন তার মধ্যে আমি দেখিনি। আশা করি আরো বহু বছর তিনি দেশে অর্থনীতির ক্ষেত্রে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তথা সার্বিকভাবে একটি সুষ্ঠু সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখবেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষেরাও যেন বস্তু হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বস্তুগত উন্নয়ন আর যন্ত্রের ব্যবহার এই দু’টির মাধ্যমে মানুষ প্রায় যন্ত্রের মতো আচরণ করছে। মানবিকতা, মমত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে, মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে এবং সেই সাথে সমাজও এককেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি মানবিক সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সকল প্রাজ্ঞজনেরা অবদান রাখবেন, সেটিই প্রত্যাশা।
সংবর্ধনার জবাবে ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমৃত্যু কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। মানব উন্নয়নের জন্য উদ্যোক্তা তৈরি, পরিবেশবিদ ও উন্নয়ন কর্মী তৈরিতে নিরলস কাজ করে যাবেন বলেও জানান এই বরেণ্য অর্থনীতিবিদ।