প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে কমিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- এমন আশ্বাসের পর সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রোববার (৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে কমিটির দাবিতে অবরোধ করা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে বলেন তারা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানান তারা।
ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই দুই নেতার আশ্বাসের পর রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে দাবি অনুযায়ী শিগগিরই কমিটি ঘোষণার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না আসলে আবারো আন্দোলন করা হবে বলেও জানান তারা।
এর আগে কমিটির দাবিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে অবরুদ্ধ করেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় নিউমার্কেট এলাকায় জয়ের গাড়িবহর আটকে দেন তারা।
যদিও অবরুদ্ধ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, এই খবর সম্পূর্ণ গুজব। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে সম্পৃক্ত থাকে। তারা আজকে এখানে এসেছিল এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির বিষয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে। বিষয়টি আমাদের প্রতিদিনের দেখা-সাক্ষাতের মতই। সুতরাং এখানে কেউ অবরোধের সুযোগ নেই।
দীর্ঘ ৬ বছর ধরে কেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হয় না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা দুই বছর করোনা সংক্রমনের মধ্য দিয়ে গেছে। ফলে ক্যাম্পাসও বন্ধ হয়ে ছিল। যার কারণে কমিটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবুও আমরা কমিটি দেওয়ার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল ২০১৩ সালে। সে বছর ২৯ নভেম্বর রাতে কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হন। এ ঘটনার জেরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ৩০ নভেম্বর স্থগিত করা হয় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটি। তখন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন ফুয়াদ হাসান পল্লব ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাকিব হাসান সুইম।
এ ঘটনার প্রায় তিন বছর পর ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর তিন মাসের জন্য নুর আলম ভূইয়া রাজুকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। এরপর ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সেই আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়কসহ মোট ১৯ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেই তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটির পর আর কোনো কমিটি হয়নি।