যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে নতুন করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ সামরিক বাহিনীর দু’টি বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনার পর ব্যাপক এই হামলা চালানো হয়। আর এরপরই ইমারজেন্সি ব্লাকআউটের শঙ্কার কথা জানিয়েছে ইউক্রেন।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। মূলত সোমবার ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত চারজন নিহত ও অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দেশের কয়েকটি অঞ্চলে আবারও জরুরি ব্ল্যাকআউট হবে বলে সতর্ক করেছে ইউক্রেন। দেশটির দাবি, রুশ হামলা ইউক্রেনীয়দের বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে এবং বহু এলাকাকে বিদ্যুৎবিহীন করে দিয়েছে। যদিও ক্ষয়ক্ষতি মেরামতের কাজ করছে ইউক্রেন।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শঙ্কা বেশ কয়েকদিন ধরেই করা হচ্ছিল। আর সোমবারই সেই রুশ হামলা হয়, আর সেটিও ঠিক এমন এক সময়ে যখন আগের রুশ হামলার জেরে সৃষ্ট ক্ষতি মেরামত করে ইমারজেন্সি ব্লাকআউট শেষ হওয়ার পথে ছিল।
ইউক্রেনের কিছু অংশে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩২ ফারেনহাইট) এর নিচে তাপমাত্রা রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে সর্বশেষ রুশ এই হামলা ইউক্রেনীয় এলাকাগুলোকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। এছাড়া এই হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন।
তার দাবি, প্রায় ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
সোমবার গভীর রাতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘অনেক অঞ্চলে, ইমারজেন্সি ব্ল্যাকআউট হবে। তবে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা সবকিছু করব।’
সংবাদমাধ্যম বলছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।
এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।
মূলত সম্মুখসারির যুদ্ধে ব্যর্থতার পর রাশিয়ার সাম্প্রতিক এসব হামলা একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ এবং শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেনে রুশ এই কৌশলের প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হতে শুরু করেছে।