রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তিনি নিজেদের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। না পেরে পরে তিনি বিজয়নগরের নাইটিংগেল মোড় থেকে ফেরত যান।
জানা গেছে, ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানার দুই মামলায় হাজিরা দেন মির্জা ফখরুল। পরে কাকরাইল হয়ে পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ তাকে বাধা দেয়। পরে বিজয়নগরের নাইটিংগেল মোড় থেকে ফেরত যান বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে তার সঙ্গে তর্কে জড়ান পুলিশ সদস্যরা। তারা বলেন, আপনি (ফখরুল) সিনিয়র মানুষ আমরা আপনাকে সম্মান করি। তবে আপনি সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এ সময় মির্জা ফখরুল পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘আপনারা আমাকে ভেতরে যেতে দেবেন কিনা সেটা বলে দেন। ’ কিন্তু কাউন্সিলের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনোভাবেই দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারবেন না বলে তাকে জানিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ আরও বলে, নয়াপল্টন এলাকায় ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিএনপি মহাসচিব তাদের প্রশ্ন করেন, ‘এটা আমাদের অফিস। এখানে আমরা প্রবেশ করতে পারবো না কেন? আমরা এখানে অবশ্যই প্রবেশ করতে পারি। ’
এ সময় পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ফখরুল বলেন, ‘আপনি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মতো কথা বলছেন। ’ তাকে থামিয়ে দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তখন বলেন, মোটেও রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীর মতো কথা বলছি না। নিজের দায়িত্ব পালন করছি।
নয়াপল্টন থেকে ফেরত যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি পার্টির মহাসচিব, আমাকে পার্টি অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না। তারা যে কথাগুলা বলছে, ওখানে বিস্ফোরক দ্রব্য আছে। কিন্তু আমাদের অফিসে কোনো কিছুই ছিল না। পুলিশই ওইসব ক্যারি করেছে বলে এ সময় দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিঃসন্দেহে একটি চক্রান্তে পড়েছি। হীন পরিকল্পনার প্লট করে বিএনপিকে কোণঠাসা করার জন্য, আমাদের ১০ তারিখের শান্তিপূর্ণ গণ সমাবেশকে নস্যাৎ করার জন্য এটা সরকারের হীন পরিকল্পনার অংশ। গণ মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করার জন্য, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য চক্রান্ত চলছে। আমি নিজের অফিসেই যদি প্রবেশ করতে না পারি। তাহলে কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন কাজ করবে। আমরা একটি ডেমোক্রেট পার্টি। তার সাংবিধানিক অধিকার আছে। সে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। কিন্তু এখন একজন দলের মহাসচিবকেই তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না!
এর আগে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে। রাতে বিএনপির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঘেরাও করে পুলিশ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলটির অফিসে অভিযান চালায়। এরপর থেকেই কার্যালয়ে কোনো নেতাকর্মীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এলাকাটিতেও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।