১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা নয়াপল্টনের কথাই বলেছি। সরকারকে এটাও বলেছি, আপনাদের কাছে যদি বিকল্প থাকে, সেটা যদি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে বিবেচনা করে দেখা হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আপনারা বলছেন, ১০ তারিখ সমাবেশে হবে, কিন্তু পুলিশ এখনও নয়াপল্টন ছাড়েনি, তাহলে পরিস্থিতি আরও সংঘাতের দিকে যাচ্ছে কি না— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ২২ আগস্টের আগে আপনারা অনেকে বলেছেন বিএনপি কিছুই পারে না। তারপর ৯টি সমাবেশ হয়েছে। আপনারা নিজেরাই দেখেছেন, মানুষ কীভাবে জেগে উঠছে। একশ মাইল সাইকেল চালিয়ে সমাবেশে এসেছে, চিড়া-গুড় নিয়ে এসেছে। ঢাকায় কী হয়, সেটা আপনারা নিজেদের চোখেই দেখবেন।
অন্যান্য সমমনা যে বিরোধীদলগুলো রয়েছে, আপনারা কি চাচ্ছেন তারা ১০ তারিখে আলাদা-আলাদা সমাবেশ করুক? —এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, যুগপৎ আন্দোলন মানেই হচ্ছে সেটা। ১০ তারিখের ব্যাপারটা কী, আমাদের সর্বশেষ বিভাগীয় সমাবেশ। তারপরে আমাদের প্রোগ্রামগুলো হবে, সেখানে আমাদের দাবি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আমাদের নতুন কর্মসূচি আসবে। সেগুলো নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যদি চাল পেয়ে থাকে সেটা তো বিস্ফোরক দ্রব্য নয়। এমন হতে পারে সেটা রাখা হয়েছিল সমাবেশে যারা আসবেন তাদের খিচুড়ি রান্নার জন্য। তবে, সেখানে ১৬০ বস্তা চাল রাখার জায়গাও নেই। এটা পুরোপুরি মিথ্যা।
আগামী ১০ তারিখ আরেকটি স্যাংশন আসার কথা পত্র-পত্রিকায় আসছে— এই ব্যাপারে বিএনপির মন্তব্য কী? এর জবাবে ফখরুল বলেন, আমরা প্রথম স্যাংশনের সময়ে বলেছি, এটা সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা। তাদের গণতন্ত্র হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন- এসবের পরিণতিতে এই স্যাংশন এসেছে। যেটা জাতির জন্য সুখকর নয়। এটা লজ্জার। আর এই লজ্জার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রশ্ন করা হয়, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে বিএনপির সমস্যা কী? মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক সমস্যা আছে। প্রথম হচ্ছে- এখন সেখানে বড় সমাবেশ করার জায়গা নেই। এতে বেশি স্থাপনা সেখানে তৈরি করা হয়েছে সেটা সমাবেশের জন্য উপযুক্ত নয়। দ্বিতীয়, ওখানে চারদিকে দেয়াল ঘেরা, বড় মিটিং, সেখানে যদি কোনো গোলযোগ সৃষ্টি হয় তাহলে বহু মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যাবে। সেখানে একটা মাত্র গেট, সেটা দিয়েও একজন-একজন করে ঢুকতে হয়। আবার সেখানে পরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মেলন হওয়ার কারণে বিশাল স্টেজের কাঠামো তৈরি আছে। এখানে বোঝা যায় তাদের (আওয়ামী লীগের) পূর্ব পরিকল্পিত চক্রান্ত আছে। আরেকটা অভিযোগ হচ্ছে, আমরা সমাবেশের চিঠি দেওয়ার পরই কোনো আলোচনা না করে সোহরাওয়ার্দীতে বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। মিনিমাম একটা বিষয় হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা, এবার সেটাও করা হয়নি।
দলের কার্যালয় পুলিশ ঘিরে রেখেছে, এ অবস্থায় কীভাবে সেখানে সমাবেশ হবে —সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর আমরা সেখানে যাব। এরপর জনগণই ঠিক করবে কী হবে।’
১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই সমাবেশ, সরকারকে পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা অবশ্যই আমাদের সমাবেশস্থলে যাব। আর জনগণ কী করবে, সেটা তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।
আওয়মী লীগের দুটি গুণ আছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, একটা হচ্ছে সন্ত্রাস, আরেকটি হচ্ছে দুর্নীতি। সন্ত্রাস না করলে তারা রাজনীতি করতে পারে না। আর দুর্নীতি না করলে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে না।