দেশে গুমের কালচার শুরু করেছেন জিয়া: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজ আমি দেখি বিএনপির লোকেরা গুম ও খুন নিয়ে কথা বলে। এ দেশে গুমের কালচার শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। তখন যারা কারাগারে ছিল তাদের কাছে আমরা অনেকবার শুনেছি। একেক রাতে জিয়াউর রহমান শত শত সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছেন।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও হত্যা করেছেন, গুম করেছেন। শুধু তাই নয়। ফাঁসি দেওয়া, একসঙ্গে ১০ জন করে ফাঁসি দিয়েছেন তিনি। ফাঁসি দেওয়ার পর সেই লাশ তাদের আত্মীয় স্বজন তো পায়নি। সেই লাশ কোথায় নিয়ে মাটি চাপা দিয়েছেন এখন পর্যন্ত কেউ সেটা জানে না।

সরকারপ্রধান বলেন, জিয়াউর রহমান এমন কোনো কারাগার নেই যেখানে ফাঁসি দেননি। ক্যান্টনমেন্টে ফায়ার স্কয়ারে নিয়ে ফায়ার করে লাশ গুম করেছেন। মৃতের পরিবার কোনো দিন লাশ দেখতে পারেনি, জানেও না কী ছিল তাদের অপরাধ। এমনও অবস্থা হয়েছিল, মামলা শুরুর আগেই বিচার শেষ! এমনও শুনা যায় যে, কাটা চামচ দিয়ে শসা খেতে খেতে ফাইল সই করেছিলেন জিয়া। কারণ রাষ্ট্রপতি সই ছাড়া তো কিছু হতো না। জিয়া ক্ষমতা দখল করে একই কায়দায় এদেশের মানুষকে বার বার হত্যা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক অফিসার, যারা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলেছিল তাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন।

তিনি বলেন, অবৈধভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মি রোল লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছিলেন জিয়া। পথ দেখিয়েছিল বেঈমান, মোনাফেক, খুনি মোশতাককে। আর সেই মোশতাকের যখন পতন হলো, আমরা দেখলাম জিয়াউর রহমান একদিন ঘোষণা দিয়ে বসলেন আজ থেকে তিনিই প্রেসিডেন্ট। সায়েম সাহেব ছিলেন রাষ্ট্রপতি, তার উপরে অস্ত্র ধরে প্রথমে চিফ মার্শালের পদটা কেড়ে নেন জিয়া। তারপর তাকে বলেন, আপনি আর রাষ্ট্রপতি নন, আপনি আর দেশ চালাতে পারবেন না। এ বলে নিজেই ক্ষমতা দখল করেন জিয়া।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। শুধু বেঁচে থাকাই তো মানবাধিকার নয়। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা দিয়েছি। আমরা বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি, স্বল্পমূল্যে দিচ্ছি। বিনা পয়সায় করোনা ভ্যাকসিন দিয়েছি, ওষুধ দিয়েছি, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেছি। দেশের গড় আয়ু বাড়িয়েছি। মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছি। এমন কোনো নদী নেই যার ওপর ব্রিজ করিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান গণ্ডগোল লাগিয়ে রেখেছিলেন। আমরা সেখানে শান্তি চুক্তি করি। সেই শান্তিচুক্তিতেও বাধা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। সে দিন হরতালও করেছে। ১৮০০ লোক সেদিন আমার কাছে আত্মসমর্পণ করে। আমরা তাদের পুনর্বাসন করেছি।

দেশবাসীর প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমরা দেশের সর্বনাশটা কী করলাম। খাদ্যের উৎপাদন বাড়ালে সর্বনাশ হয়ে গেল। তবে হতে পারে, যাদের আত্মসম্মানবোধ নেই তাদের কাছে। আমরা যখন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘোষণা করি তখন বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয়। তাদের নীতি হলো বিদেশ থেকে ভিক্ষা আনা। আত্মসম্মানবোধ নিয়ে দেশ দাঁড়াক সেটা তারা চায় না।