প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোনো দলকে আমরা জোর খাটিয়ে নির্বাচনে আনতে পারব না। আমরা বিএনপিকে দুইবার চিঠি দিয়েছিলাম সংলাপের। কিন্তু এখনও নির্বাচন কমিশনের ওপর বিএনপির অনাস্থা রয়েছে। তাদের মতো অন্যতম প্রধান বিরোধীদল নির্বাচনে অংশ নেওয়া দরকার। আর যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে একটি অপূর্ণতা থেকে যাবে, নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হবে না।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে বরিশালের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, বরিশাল বিভাগের স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আমরা এই বার্তা দিতে এসেছি, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করতে চায়। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারসহ সব জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারদের পক্ষ থেকে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন আসন্ন নির্বাচনে তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে যদি তারা দায়িত্ব পালন করেন তাহলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য এবং অবিতর্কিত হবে।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দশ দফায় ইভিএম এবং নির্বাচন কমিশন বাতিল চেয়ে যে দাবি তোলা হয়েছে সেবিষয়ে বলেন, আমরা এগিয়ে যেতে থাকব। আমরা নির্বাচন করব সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে। যেভাবে শপথ গ্রহণ করেছি সেভাবে আমরা কিন্তু রাজনীতি করি না। যারা রাজনীতি করেন তাদের অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে কৌশল অবলম্বন করার। সে বিষয়ে আমাদের কোনো রকমের মন্তব্য নেই।
‘বিধান অনুসারে যেমন আছে আমি সেভাবে দায়িত্ব পালন করব। কাল আমি থাকব কি থাকব না তা জানি না। এমনও তো হতে পারে কালকে আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হলো। তখন নির্বাচন নিয়ে কোনো দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হবে না। তবে যতক্ষণ আমি কমিশনে আছি ততক্ষণ আমরা বিশ্বস্ততার সঙ্গে, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাবো।
আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে একটা জটিলতা রয়েছে। তবে সামনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, ইভিএমের অনেক ইতিবাচক দিক আছে। বিশেষ করে যে সংকটের মুখে আমরা বলতে পারি, নির্বাচনে জালভোট দেওয়া বা ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে সিল দিয়ে বাক্স পূরণ করা- তা কোনভাবেই ইভিএমে সম্ভব নয়। তবে ইভিএম নিয়ে অভিযোগ, এর ধীরগতি। গতি বাড়াতে আমরা আধুনিক পর্যায়ের কাজ করছি। আমরা চাইছি দশ আঙ্গুলের ছাপ নিতে। এতে জটিলতা কেটে যাবে।
বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান, পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সঞ্জয় কুমার কুন্ডু, জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম প্রমুখ।