তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এ দেশে আর ‘পঁচাত্তর’ সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না, কাউকে হত্যার রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টাউন হলের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। মোহাম্মদপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তারের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য শেখ সাদেক খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি বজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা এবং মহানগর উত্তরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সময়েও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু মুজিবকে যখন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিলো তখন বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হত্যা করা হয়েছিলো। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীরা, দেশবিরোধীরা, দেশের উন্নয়নবিরোধীরা, তাঁরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে আজকে তাঁকে হত্যা করতে চায়, যেটি বিএনপির রাজশাহীর জেলা আহ্বায়ক মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। এ দেশে হত্যার রাজনীতি কাউকে করতে দেওয়া হবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রস্তুত আছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছে। আর এ দেশে ‘পঁচাত্তর’ সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। নেতাকর্মীদের বলবো যে হাতে বোমা আনবে সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাতে অস্ত্র ধরবে, সেই অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসীদের শায়েস্তা করতে হবে। তাদেরকে আর রক্তের হোলি খেলা খেলতে দেওয়া হবে না।’
বিএনপির কারণে মানুষ এমন কি মার্কিন দূতাবাসও আতংকিত উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি আজকে যে হত্যার রাজনীতি করছে, হত্যার হুমকি দিচ্ছে, পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করছে এবং গাড়িঘোড়া ভাংচুর করছে, এতে সাধারণ মানুষ আতংকিত, মার্কিন দূতাবাসও আতংকিত হয়েছে। বিএনপির অপরাজনীতির কারণে আজকে তারা তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে। বিএনপি আজ অপরাজনীতি করে দেশের মানুষকে আতংকিত করতে চায়।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘দেশে বিএনপির আতংকের এই খেলা আর খেলতে দেওয়া যাবে না, আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজপথ থেকে উঠে আসা দল। আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত প্রবহমান। যে রক্ত আপোষ জানে না, যে রক্ত ‘রক্তচক্ষু’কে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলে, তিনি শেখ হাসিনা।’
এ দিনের বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এতোদিন ধরে বিএনপির পাশাপাশি দেশে শান্তি সমাবেশ করছিলাম কারণ বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে অশান্তি তৈরি করা। কিন্তু আজ আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছি কারণ গত শুক্রবার বিএনপির রাজশাহীর জেলা আহ্বায়ক বক্তৃতা করে আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলো, হাজার হাজার সেনাসদস্যকে এবং আওয়ামী লীগের ২২ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করে ক্ষমতায় টিকেছিলো। জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও হত্যার রাজনীতি করেছেন। তার এবং তারেক রহমানের পরিচালনায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে, বিএনপি এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর পরিচালনায় বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সমাবেশের ওপর হামলা পরিচালনা করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আর ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে এ দেশের নিরীহ মানুষকে তারা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সুতরাং তাদের রাজনীতি হচ্ছে হত্যার রাজনীতি, খুনের রাজনীতি। তারা এ থেকে বের হয়ে আসতে পারেন নাই। তাদেরকে, কাউকে আর এ দেশের হত্যার রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’