দেশের কৃষিতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স (পার্টনার) প্রকল্পে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তাকে প্রেষণে পদায়ন করা হয়েছে। প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে প্রেষণে পদায়ন পেয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের উপপরিচালক বিসিএস ১৩ ব্যাচের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মিজানুর রহমান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. গৌর গোবিন্দ দাশকে প্রেষণে এ্যাডিশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর পদে পদায়ন করা হয়েছে।
এছাড়া প্রেষণে ডেপুটি প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর পদে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মনোতোষ সিকদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাহবুবা মুনমুন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ তৌফিক আরেফীনকে পদায়ন করা হয়েছে।
৬ হাজার ৯১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৬৪ জেলার ৪৯৫ উপজেলায় পার্টনার বাস্তবায়িত হবে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন সময়সীমায়। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ হাজার ১৫১ কোটি ১৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইডিএ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট-ইফাদ থেকে ঋণ সহায়তা বাবদ পাওয়া যাবে ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ১৮ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্প পাস হয়।
প্রকল্পটি দেশের কৃষির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের কৃষি সেক্টরের বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮ এর কর্মপরিকল্পনা (২০২০) ও উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা ২০১০ বাস্তবায়নসহ এসডিজি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেলটা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রকল্পটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাঊন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একযোগে বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষক, উদ্যোক্তা এবং কর্মচারীদের ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত প্রদর্শনী, কৃষক স্মার্ট কার্ড প্রবর্তনের মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষিসেবা নিশ্চিতকরণ, সেচ অবকাঠামো, আবাসিক, অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, মোবাইল ক্রপ ক্লিনিক ও কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক সেমিনার ও ওয়ার্কশপ আয়োজন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন ঘটানো হবে।
কৃষি বিপণন অধিদফতরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, শস্য গুদাম, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রসেসিং হাউজ ভবন নির্মাণ, বাজার চাহিদা, মূল্য পূর্বাভাস ইত্যাদি সম্পর্কে গবেষণা, দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাঊন্সিলের মাধ্যমে রাস্তা, সেচ ব্যবস্থাপনা, ট্রেনিং কমপ্লেক্স, রিসার্চ কনসোর্টিয়াম অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে, উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসোর্স সিস্টেমের সক্ষমতা বাড়ানো ও যন্ত্রপাতি কেনা হবে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, সেচ যন্ত্রপাতি ও ল্যাবরেটরি যন্ত্রপাতি কেনা হবে। বীজ উৎপাদন ও সার বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আধুনিক শস্যের স্বত্ব চালুকরণ ও ফসলের জাত উদ্ভাবন, ল্যাব ও ট্রেনিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। বিজ্ঞানীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষা দেওয়া হবে। গবেষণাগারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হবে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে ফলনের সম্ভাবনা বাড়ানোর গবেষণা ও অ্যাডাপটিভ ট্রায়াল, ক্রপিং প্যাটার্ন উন্নয়ন ও সেচ প্রযুক্তির উদ্ভাবনের গবেষণা, নতুন জাত উদ্ভাবন ও উদ্ভাবিত জাতের প্রদর্শনী, অ্যাক্রেডিটেশন পরীক্ষা ও গবেষণা যন্ত্রপাতি কেনা হবে।
এছাড়া বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয় ও সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন করা হবে। দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।