জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, এক দীর্ঘ সংগ্রাম, চরম আত্মত্যাগ ও এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই দেশ, এই জাতি আর কখোনো কারো পদাবনত হবে না। দাসত্বের শৃঙ্ক্ষল ভাঙতে আমাদের পূর্ব পুরুষগণ এক সাগর রক্ত উৎসর্গ করেছেন, আমাদের মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন। এই জাতি লাখো শহীদ আর মা-বোনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। যে সব জাতির আন্তর্জাতিক ভু- রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ আছে, যারা সমগ্র বিশ্বে জ্ঞান বিতরণ, মানবতা বিতরণ, অস্ত্র বিতরণ করতে চান তারা সম মর্যাদায় বন্ধুত্বের হাত বাড়ান, প্রভুত্বের রক্ত চক্ষু নয়।
আজ শনিবার জয়পুরহাট-২ আসনের ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার পৃথক পৃথক ৮ টি গ্রামে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল এবং উন্নয়ন ও জন- আকাঙ্ক্ষা বিষয়ক মত বিনিময় সভা এবং ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ২৯৩ টি প্রতিষ্ঠানে ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা টিআরের অর্থ বিতরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা আলোচনার গোলটেবিলে বসে স্বাধীনতা পাই নি। আমরা অনেক পরাক্রমশালী রাষ্ট্রের সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বাধীনতা পেয়েছি। অনেক রাষ্ট্র আমাদের জাতির জনকের নৃশংস হত্যার পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নি। আমরা সব জানি, সব মনে আছে। তবুও জাতির জনকের শেখানো অহিংস পথে আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বে বিশ্বাসী, কারো সাথে বৈরিতায় নয়। যে কেউ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চাইলে অতিথিপরায়ন অহিংস বাঙালির দরজা আপনাদের জন্য সর্বদা খোলা আছে। কিন্তু ভাল বন্ধু হোন, প্রভু নয়। মনে রাখবেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাঙালির প্রভু হওয়ার অলীক আকাঙ্ক্ষা অনুগ্রহ করে পরিত্যাগ করুন।
হুইপ স্বপন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রকাশ্য এজেন্ডা জঙ্গীবাদমুক্ত সমাজ, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানুষের মৌলিক অধিকার এবং ভোটাধিকার। গোপন এজেন্ডা কিছু থাকলে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশও অভিন্ন বিষয়ে একই মতবাদ ব্যক্ত করে এবং একই লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করছে। এটি আজ প্রমাণিত সত্য। আপনাদের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের সমস্যা আমরা গোপন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী নই। কতিপয় পার্সোনালি হেড ডাইভারটেড ক্ষমতালিপ্সু সিভিল এবং নতজানু জাতীয়তাবাদী পদলেহনকারী নারী- পুরুষ রাজনীতিবিদের মত আপনাদের অফিসারদের নিকট দিনে- রাতে হাজিরা দিতে আমরা পারব না। এই পদলেহন আওয়ামী লীগের রক্ত বীজে নেই।
তিনি বলেন, আপনারা যাদের চাটা ও কথায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন, তারা অনেকেই অতীতে আপনাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে জঙ্গীবাদ লালন করেছে,ন, আইনের শাসন ভুলুন্ঠিত করেছেন, মানবাধিকার গলা টিপে হত্যা করেছেন। আর, তথাকথিত ক্ষমতালিপ্সু সুদখোরদের সাথে বাংলাদেশের জনগণ নেই। জনগণ তাদের ঘৃণা করে। ওদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে একটি ক্রম বিকাশমান পরমতসহিষ্ণু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতা করা সমীচীন হবে না। একটি কথা স্মরণ রাখবেন বন্ধুরা, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ কেবল মাত্র বাংলাদেশের উন্নয়ন, শান্তি ও মানবতার পাহাড়াদার নয়। শেখ হাসিনা আজ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতির জন্য অপরিহার্য অনুষঙ্গ। শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতির জন্য সুখকর হবে না।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এসব পৃথক পৃথক সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, কালাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন, আক্কেলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম আকন্দ, ক্ষেতলাল উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল, ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত বন্যা, আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ মোকছেদ আলী, মেয়র শহীদুল আলম, মেয়র রাবেয়া সুলতানা, জয়পুরহাট চেম্বার সভাপতি আলহাজ্ব আহসান কবীর এবলব, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মাসুদ রেজা প্রমুখ।