প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেওয়ায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার কাছে ক্ষমতা নয়, দেশের স্বার্থই বড়। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে— এমন দৈন্যতায় শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না।’
২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচনে হারানোর জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানী-গুণীও উঠেপড়ে লেগেছিলেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছিল। ফলে আমরা ওই নির্বাচনে সরকারে আসতে পারিনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রপতি আমাদের দেশে এসেছিলেন। আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে যখন লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন, তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমাদের পার্টি থেকে আমি এবং তখনকার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন খালেদা জিয়া ও মান্নান ভুঁইয়া। সেখানে জিমি কার্টার আসেন দূত হিসেবে। এবারও একই প্রস্তাব। আমি একই কথা বলেছি। বলেছি, আমাকে সার্ভে করতে হবে, আমার দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে, পঞ্চাশ বছরের রিজার্ভ থাকতে হবে, তারপর উদ্বৃত্ত গ্যাস বিক্রির কথা আমি চিন্তা করব।’
‘দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে— এমন দৈন্যতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা ভোগে না। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না। একবার চিন্তা করেন, সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে কি আজ এত চমৎকার সার কারখানা আমরা করতে পারতাম?’
‘কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমার চোখের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার রাষ্ট্রপতি এসে তার পিঠে হাত দিয়ে বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম, চাচা এখন চলেন। আমি বুঝতে পেরেছি কী হবে? কিন্তু আমি এটা কেয়ার করিনি। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়। আমরা সেখান থেকে চলে এসেছিলাম’- বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেন। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা। এটি সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী পলাশ উপজেলায় জিপিইউএফএফ প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বার্ষিক নয় লাখ ২৪ হাজার টন সার উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এ কারখানার উদ্বোধন করেন।