শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপকভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব মিথ্যাচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরনো ভিডিও ছড়িয়ে এবং নতুন ভিডিও তৈরি করে এ অপপ্রচার করা হচ্ছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যাম্যাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম’ এর বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ প্রোগ্রামটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় চলমান।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক অপপ্রচার করা হচ্ছে। সেটি ব্যক্তিস্বার্থ বা গোষ্ঠীস্বার্থ হানি হওয়ার ভয়ে। এটা তো নির্বাচনের মৌসুম। নির্বাচনের মৌসুমে কিছু উটকো ঝামেলা থাকেই।
তিনি বলেন, এখানে উসকানিতে অনেকেই লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের ইচ্ছা অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করা। যেহেতু আমাদের অভিভাবকরা দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত যে- কে কত নম্বর পেল, আমার বাচ্চা জিপিএ-৫ পেল কি না, আমার বাচ্চা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হলো কি না, অন্যের বাচ্চার চেয়ে বেশি নম্বর পেল কি না, এ বিষয়গুলো নিয়ে যেহেতু তারা অতিমাত্রায় ব্যস্ত ছিল, সেই জায়গাটি থেকে বেরিয়ে এখন সহযোগিতার জায়গা, একে অপরের সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়ে কাজ করছে, এ বিষয়গুলো নিয়ে কিছুটা সংশয় বাবা-মার মধ্যে কাজ করছে এবং তা স্বাভাবিক। সেই সুযোগটিকেই এ গোষ্ঠীগুলো কাজে লাগাচ্ছে এবং তাদের বিভ্রান্ত করছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে খারাপ যেটা এবং একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, সেটা হচ্ছে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে অপপ্রচার করছে। আমাদের ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়েও তারা মিথ্যাচার করছে এবং সেগুলো জঘন্য ধরনের মিথ্যাচার। তার পাশাপাশি সম্প্রতি দেখছি যেগুলো আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ নয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ নয়, আমাদের ক্লাসের অংশ নয়, আমাদের এ নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ নয়, তেমনই নানা রকমের ভিডিও দিয়েও অপপ্রচার করা হচ্ছে। যেমন অতীতের প্রশিক্ষণের কিছু ভিডিও, প্রশিক্ষণের সময় দীর্ঘ সময় ধরে প্রশিক্ষণ চলে, মাঝখানে কিন্তু ব্রেক থাকে, যখন প্রশিক্ষণ প্রার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা হয় যাতে তারা নিজেরা কিছু করে বিনোদনের জন্য, সেই সময়ের, অতীতের যা আমাদের সময়েরও না, সেসব প্রশিক্ষণের ওই সময়ের কিছু ক্লিপ, সেগুলোকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে এটা হচ্ছে প্রশিক্ষণ। এ মিথ্যাচারগুলো এখন ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে। এছাড়া মনে হচ্ছে কিছু ভিডিও তৈরি করেও তারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি অভিভাবকদের বলবো একটু দেখুন, ধৈর্য ধরুন। গত এক বছরে যদি আপনার বাচ্চা ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে থাকে তবে তার আচরণগত তফাত আপনার নিজেরই বোঝার কথা। সে কি শিখছে কেমন করে শিখছে সেগুলোতেও বিরাট একটা তফাত আপনাদের চোখে পড়ার কথা।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) আবদুন নূর মোহাম্মদ আল ফিরোজ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।