বোয়ালমারী, মধুখালীর পর এবার ফরিদপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলনের পক্ষে যোগ দিয়েছে আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এর ফলে ফরিদপুর-১ আসনে ঈগল মার্কার পক্ষে তৈরি হওয়া ব্যাপক গণজোয়ার আরো শক্ত অবস্থান পেলো।
এর আগে বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা যুবলীগও আরিফুর রহমান দোলনের সমর্থনে একাট্টা হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া তিন উপজেলার বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঈগল মার্কার প্রার্থী দোলনেই আস্থা রাখছেন।
নির্বাচনী প্রচারের ষষ্ঠ দিন শনিবার বিকালে এক কর্মী সমাবেশে আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ এক মঞ্চে এসে ঈগল মার্কাকে সমর্থন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলনকে এমপি নির্বাচিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আলফাডাঙ্গা পরিবহন বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন। সাবেক ইউপি সদস্য আহসান হাবীব নাজমুল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
আরিফুর রহমান দোলন তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী এ প্রার্থীকে নির্বাচনী মাঠে সহিংসতা উসকে না দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
দোলন বলেন, ‘আজকে জনপ্রতিনিধিরা, সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মান-সম্মান বাঁচাতে, ইজ্জত বাঁচাতে, মনোনয়ন বাণিজ্য ঠেকাতে, কমিটি বাণিজ্য ঠেকাতে ঈগল মার্কার পক্ষে যোগদান করছেন।’
‘আজকে ঈগল মার্কার পক্ষে আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর যুবলীগ একাকার হয়ে গেছে। এরপর মধুখালী থেকে শুরু হবে। প্রত্যেকটা ইউনিয়ন থেকে দলে দলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঈগল মার্কার পক্ষে যোগদানের অপেক্ষায় আছে।’
দোলন বলেন, ‘সাধারণ জনতাকে অনেক অপমান করার চেষ্টা করছেন। ইউপি নির্বাচনে নৌকা বিক্রি করেছেন। কমিটি বাণিজ্য করেছেন। অযোগ্যদের হাতে নেতৃত্ব দিয়ে সংগঠনকে দুর্বল করেছেন। দায়িত্বে ছিলেন, দায়িত্বে থেকে কি কাজ করেছেন এ অঞ্চলের মানুষ সব জানে।’
আরিফুর রহমান দোলন ফরিদপুর অঞ্চলের প্রয়াত কৃতী পুরুষ কাঞ্চন মুন্সীর উত্তরসূরি। গোটা অঞ্চলে শতবছর ধরে সমাজসেবা ও শিক্ষা বিস্তারে কাঞ্চন মুন্সী পরিবারের ভূমিকা সুবিদিত। দোলন নিজেও গত দুই দশক ধরে ফরিদপুর-১ আসনে বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে দোলন বলেন, ‘আমার পরিবার নিয়ে কথা বলেন। আপনি কোন পরিবার থেকে আসছেন? ভূমিহীন থেকে হাজার বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। দয়া করে চোখ রাঙাবেন না। আমার দিকে চোখ রাঙালে, ফরিদপুর-১ আসনের জনতা আগামী ৭ জানুয়ারি এর সমুচিত জবাব দেবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রহমান কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন সেই প্রশ্নও তোলেন দোলন। বলেন, ‘তিনি নাকি বীর মুক্তিযোদ্ধা। কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন? ফরিদপুর-১ আসনের মানুষ তা জানতে চায়।’
আগামী ৭ জানুয়ারি ঈগল মার্কাকে নির্বাচিত করে ফরিদপুর-১ আসন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দোলন বলেন, ‘ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে ফরিদপুর-১ আসনের নিপীড়িত, নির্যাতিত, অবহেলিত, অসম্মানিত জনতার বিজয় নিশ্চিত করবেন। আপনাদের কাছে এটিই আমার আর্জি।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সাবেক সদস্য শেখ শওকত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামরুল ইসলাম, টগরবন্ধ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হাসান শিপন, বুড়াইচ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি আহসান উদৌলা রানা, বোয়ালমারী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক হান্নান মোল্লা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা পারভীন, পৌর কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ, গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমান, উপজেলা যুবলীগ নেতা আশিকুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো. মনির হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।