অ্যামাজন-শেভরন-বোয়িং বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশে অ্যামাজন, শেভরন, কোক, বোয়িংয়ের মতো মার্কিন কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

তিনি বলেছেন, এসব কোম্পানি যদি আমাদের বিজনেস ভ্যালু অডিশনের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে দেশ এগিয়ে যাওয়ার যে পথ সেটা আরও সহজ হবে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, যেসব ইউএস কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে অপারেট করে তারা যেন সহজে ব্যবসা করতে পারেন। কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে। এছাড়া নতুন নতুন আমেরিকান কোম্পানি, যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী, যেমন আজকে অ্যামাজন আসছিল। তারা কিভাবে বাংলাদেশের পণ্য এখানে যুক্ত করতে পারেন। কিভাবে বাংলাদেশের মার্কেট এই গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হতে পারে, এই সুযোগ-সুবিধাগুলো আমাদের এখানে আসছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৯০ শতাংশ ব্যবসা কিন্তু গার্মেন্টসের। এখানে কিন্তু গার্মেন্টসের কেউ ছিলেন না। তারা মূলত এ দেশের ই-কমার্স ইনফ্রাসট্রাকচার, ই-কমার্স বিজনেস থেকে শুরু করে এ দেশের জ্বালানি, নিরাপত্তা বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। এখানে শেভরনের প্রতিনিধি ছিলেন। টেলকোর প্রতিনিধিরা ছিলেন। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডের প্রতিনিধিরা ছিলেন। এখানে স্টার্টআপ পর্যায় থেকে আরম্ভ করে একেবারে বোয়িং পর্যন্ত তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, মূলত এখানে তিনটি জিনিস কাজ করবে, সেগুলো- বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখন মার্কেটে কাজ করছে। এই মার্কেট একসেসটা ইজিয়ার হবে যদি স্মার্ট বাংলাদেশ ফর স্ট্রাটেজিক গ্রোথের সাজেশনগুলো যদি এডাপ্ট করতে পারি। দ্বিতীয়ত, ইউএসএর যে ইনভেস্টমেন্ট সেটা আরও সহজে কিভাবে বাংলাদেশে আসবে। সে বিজনেসটা যেন ইনোভেশনের মধ্যে থাকে এবং আমাদের মূল টার্গেট এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশনে হেল্প করে। আর সবশেষে বাংলাদেশ এবং ইউএসএর সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা।

তিনি বলেন, আমরা কটন নিয়ে কথা বলেছি, আমরা ইউএস কটনের বড় আমদানিকারী দেশ। সেই ইউএস কটন থেকে তৈরি করা পণ্য কিভাবে মার্কেট একসেস পেতে পারে, সেজন্য তারা কাজ করবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন অ্যামাজন সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফার্ম। আমরা সেন্টার ওয়ারিং হাউস তৈরি করব। তারা সেখান থেকে পণ্যগুলো সংগ্রহ করবে। এরপর তারা সেগুলো আঞ্চলিকভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রি করবে।

বাংলাদেশ এমন কোন পলিসি করবে কি না, যার মাধ্যমে দেশের বাইরে ট্রানজেকশন করা যায়, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই। আমরা সেন্ট্রাল ওয়্যার হাউজের মাধ্যমে গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হবো। আমাদের নেগেটিভ কোনো আলোচনা হয়নি, সব পজিটিভ আলোচনা হয়েছে। আমরা একক কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক প্রমোশনের জন্য এখানে বসিনি। তারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা (ইউএসএর প্রতিষ্ঠানগুলো) আমাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। তারা তাদের কোন ব্যবসায়িক লাভ আলোচনা করেননি। বরং তারা আমাদের আর্থ-সামাজিক ব্যবসায়িক পরিবেশ কিভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেসব নিয়ে আলোচনা করেছেন। একইসঙ্গে আমাদের দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ কিভাবে ভালো করা যায় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কিছু কিছু মার্কিন কোম্পানি বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এ সময়ে সোশ্যাল বিজনেস গুরুত্বপূর্ণ নাকি যারা বড় বিনিয়োগ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন, তাদের ফেরানো গুরুত্বপূর্ণ, এমন প্রশ্নের উত্তরে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দেশের মার্কেট যেখানে অ্যাক্সেস পাবে এবং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেট যারা আগ্রহ নিয়ে আমাদের দেশে আসবে, যেমন- ফেসবুক, অ্যামাজন, শেভরন, কোক, বোয়িং তারা যদি বাংলাদেশের বিজনেস ভ্যালু অডিশনের সাথে যুক্ত হয় তাহলে দেশ সামনে দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে পথ সেটা আরও সহজ হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ২৬ সালের মধ্য এলডিসি থেকে ডেভেলপিং কান্ট্রি থেকে উন্নীত হবে। এই দুই বছরের মধ্য বিভিন্ন দেশের মার্কেটে অ্যাক্সেস পেতে চাই। এক্ষেত্রে ইউএস বাংলার যে বিজনেস কাউন্সিল যে মার্কেট এক্সেস করপোরেট কাউন্সিলের সাথে সংযুক্ত করার জন্য তারা আমাদের দেশে এসেছেন।

তিনি বলেন, কোনো বড় কোম্পানির যখন কোন চেম্বারের মাধ্যমে আসে বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যৎ দেখেই আসে। আমরা চেষ্টা করব, কিভাবে আমাদের পলিসি দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে পারি। বাংলাদেশ কোনো ছোট মার্কেটপ্লেস নয়। এটা ৩শ ৩০ মিলিয়ন মানুষের মার্কেট। সুতরাং তারা বড় একটি জনসমুদ্র দেখেই এসেছেন। এদেশে আগামী পাঁচ বছর একটা স্থিতিশীল সরকার থাকবে এবং আগামী পাঁচ বছর তারা উন্নয়নে কাজ করবেন সেই মানসিকতা নিয়েই তারা এখানে এসেছেন। তাদের আসার মাধ্যমে আমাদের নতুন বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন কোম্পানি এদেশে আসার পথ উন্মুক্ত হবে।