অবশেষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের থানা-ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত কমিটিগুলো জমা দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে।
২/১ দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কমিটি জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দক্ষিণের নেতারা। এসব কমিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে একযোগে ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এ নিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
সূত্র বলছে, মঙ্গলবারই মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি তাদের অংশের থানা-ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত কমিটিগুলো কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন। এসব কমিটি এরই মধ্যে দলীয় প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মহানগর দক্ষিণের নেতারা এখনও তাদের অংশের থানা-ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত কমিটিগুলো কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেননি। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার কারণেই কমিটি জমা দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে দাবি এই অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেছেন, এক বছর আগেই তাদের অংশের থানা-ওয়ার্ড কমিটিগুলো করে রাখা হয়েছিল। নানা কারণে এতদিন জমা দেওয়া না গেলেও এখন আমরা প্রস্তাবিত কমিটি জমা দিয়েছি। কমিটিগুলোতে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের ত্যাগী ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থায়ই বিতর্কিত ও অপরাধে যুক্ত এবং অনুপ্রবেশকারীদের কমিটিতে আনা হবে না।
মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জানান, দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কাজ তারা আগেই শেষ করেছেন। তবে সভাপতির অসুস্থতার কারণে এটি কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়া যায়নি। দু-এক দিনের মধ্যে প্রস্তাবিত কমিটিগুলো জমা দেবেন তারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আওতায় ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড, একটি ইউনিয়ন এবং ৮৮৪টি ইউনিট কমিটি রয়েছে। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আওতায় রয়েছে ২৪টি থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড ও ৬১০টি ইউনিট কমিটি। দীর্ঘদিনেও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো গঠন ও ঘোষণা না হওয়ায় হতাশা চলছে তৃণমূলের নেতাকর্মীর মধ্যে।
তবে ২০২২ সালের অক্টোববের মধ্যে দুই অংশের আওতাধীন সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট সম্মেলনগুলো শেষ করা হয়। এর পর সম্মেলনস্থলেই মহানগর উত্তরের ৮৮৪টি এবং দক্ষিণের ৬১০টি ইউনিট কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পাশাপাশি সিংহভাগ ইউনিটি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। তবে তৃণমূল সম্মেলনের এক বছর আট মাস পার হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা হয়নি।
এ অবস্থায় দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক নেতাদের বারবার তাগাদা ও হুঁশিয়ারির পরও কোনো থানা-ওয়ার্ড কমিটি গঠন ও ঘোষণা হয়নি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় ফোরামের একাধিক সভায় বাবরার এ বিষয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। যদিও এই সময়সীমা একাধিকার পার হলেও দীর্ঘ সময়েও কমিটি গঠনের পথে হাঁটেননি দুই অংশের নেতারা।