গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় ইসরায়েলি সেনার অভিযান শুরুর পর গত প্রায় দুই মাসে সেখানে নিহত হয়েছেন প্রায় ৯০০ জন হামাস যোদ্ধা। ইসরায়েলের সেনাপ্রধান জেনারেল হেরজি হালেভি এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের অস্থায়ী পোস্ট পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হালেভি। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘গত মে মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত রাফায় প্রায় ৯০০ জঙ্গি (হামাস যোদ্ধা) নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত একজন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বেশ কয়েক জন কোম্পানি কমান্ডার এবং বহুসংখ্যক সাধারণ যোদ্ধা রয়েছে।’
আরও কয়েক সপ্তাহ রাফায় অভিযান চলবে উল্লেখ করে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান বলেন, ‘অভিযানের প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে। এই পর্যায়ে এখন হামাসের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করা হচ্ছে। এসব অবকাঠামোর মধ্যে বেশ কিছু আবার ভূ-গর্ভস্থ। তাই রাফায় অভিযান শেষ হতে খানিকটা সময় লাগবে।’
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা এই উপত্যকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে। গাজার একসময়ের ‘লাইফ লাইন’ নামে পরিচিত রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের অবস্থান এই শহরেই। এই ক্রসিংয়ের অপর প্রান্তে মিসরের সিনাই উপদ্বীপ। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর আগ পর্যন্ত রাফা ক্রসিং দিয়েই গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য ও ত্রাণের সরবরাহ আসতো।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলার পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। অভিযানের শুরুর দিকে এই সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাফায় এসে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি। এ কারণে গত এপ্রিলে যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রাফায় অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন, সে সময় তার তীব্র বিরোধিথা করেছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
তবে সেই বিরোধিতা উপেক্ষা করেই গত মে মাসের শুরু থেকে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। অভিযান শুরুর আগে এ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের মূল লক্ষ্য হামাসকে চিরতরে নিষ্ক্রিয় করা এবং রাফায় অভিযান ব্যাতীত এই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়।
সূত্র : সিনহুয়া, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড