স্থায়ীভাবে মাদকের অবাধ ব্যবহার বন্ধ এবং মাদক নির্মূল করতে মাদকের সরবরাহ উৎসের মূলোৎপাটন করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ দেশের সব সচেতন নাগরিককে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।
বুধবার (১০ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মাদকাসক্তি- অপরাধ নাকি মানসিক রোগ এবং এর প্রতিকার শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশ করে। তাহলে কেন আমরা মাদকের প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করতে পারছি না? মাদকের প্রবেশপথগুলো চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে মাদক কারবার বা মাদক সরবরাহের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে মাদক নির্মূল করতে হবে। মাদক নির্মূলে সবাইকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।
মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মাদকের ক্ষতিকারক দিকগুলো আলোচনার পাশাপাশি সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা ও বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং মাদকবিরোধী কার্যক্রম এতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে মাদকের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব সম্পর্কে তথ্যসমূহ সহজভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
ঢাকাসহ অন্যান্য শহরগুলোতে পর্যাপ্ত বিনোদনের অভাব এবং খেলাধুলার মাঠ সংকটও উঠতি বয়সী ছেলেদের মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের শহরগুলোতে পর্যাপ্ত বিনোদনের অভাব এবং খেলাধুলার জন্য মাঠের সংকট রয়েছে। ফলে উঠতি বয়সীরা অবসর সময়গুলো কাটানোর জন্য মাদক ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়। একটি নগর পরিকল্পনায় যেমন ২৫ শতাংশ যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা জরুরি, ঠিক তেমনি ড্রেনেজ, খেলাধুলা ও বিনোদন ব্যবস্থার জন্য ১৫ শতাংশ থাকতে হবে।
এথেনা লিমিটেডের আয়োজনে এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জারা জাবিন মাহবুব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিশিষ্ট চিকিৎসাবিদ ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওনসহ আরও অনেকে।