জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: জামায়াত আমির

হিংসা, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ নয় বরং ক্ষমা ও সংশোধনের মিশন নিয়ে বিদ্যমান রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা প্রবর্তন করে গণমুখী নতুন ধারার রাজনীতি প্রবর্তনের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের কলমকে শাণিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ থাই চি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত জামায়াত বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কারণেই আমরা আপনাদের সাথে খোলা মনে কথা বলতে পারিনি। গণমানুষের কল্যাণে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারিনি।

অথচ শুধু মানুষ নয় বরং আল্লাহর সকল সৃষ্টিকে সম্মান করা আমাদের দায়িত্ব। মানুষ সৃষ্টির সেরা।

মানুষের কল্যাণের জন্যই সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই মন্দের বিপরীতে মন্দের চর্চার কোনো সুযোগ নেই।

সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, সাংবাদিক ও রাজনীতিকরাই সমাজ পরিবর্তনে এবং ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় যুগপৎভাবে কাজ করেন। রাজনীতিকরা যেমন রাজপথে গুলিতে মারা যান, সাংবাদিকরাও ঠিক তেমনি। তাই আমাদের পেছনে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় স্বার্থে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। তাই জাতীয় স্বার্থেই আমাদের দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে পুরো বিশ্বই আমাদের সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে। আর দেশের সকল নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হলে গণমাধ্যমকর্মীসহ রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উদ্দেশ্য হবে গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণ। নিকট অতীতে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের কলমকে রুদ্ধ করা হয়েছিল। সাময়িকভাবে হলেও সে তালা এখন খুলেছে। এ বিজয় ধরে রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বীজতলা সুন্দর হলে তা মহীরূহে পরিণত হবে এবং তা এক সময় ছায়া ও ফল দেবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের ওপর যারা জুলুম-নির্যাতন করেছে, আমরা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। আমরা সংশোধন ও ক্ষমার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তবে কোনো ভিকটিম বা ভিকটিমের পরিবার যদি আইনের আশ্রয় নেন, তাহলে আমরা তাদেরও সহযোগিতা করব। দল হিসেবে আমরা কোন প্রতিশোধ নেব না। আমরা আদর্শ ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাসী। আর আদর্শ ডেমোক্রেসির মূলমন্ত্রই হচ্ছে, যার যার মতো স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার এবং পরমতের প্রতি সহনশীলতা।