
নোয়াখালী সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাঈনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নোয়াখালী। এরই সাথে নড়েচড়ে বসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জমি, বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি সহ বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের তথ্য উঠে এসেছে।
১৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার দুপর ২ টায় নোয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল নোমান বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। সাবেক সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বর্তমানে নোয়াখালী চিকিৎসা সহকারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (ম্যাটস) জুনিয়র লেকচারার ডা. মাঈনুল ইসলামের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ হয়। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিপূর্বে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। অতি শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরোও জানান, অভিযুক্ত এ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি স্বাস্থ্য দফতরে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তার লাইফস্টাইল এবং সম্পদের পরিমাণ সরকারি বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ী পৌর এলাকার কৌশল্যারবাগ গ্রামের মৃত আবদুল মতিনের ছেলে ডা. মাঈনুল ইসলাম ২০০০ সালে সোনাইমুড়ী বাজারের কলেজ রোডে মেডিকেয়ার হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হন। ২০০১ সালে সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন থাকলেও তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেননি। তার বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালের চাকরি করা কালীন বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সংসদ সদস্যকে হাত করে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার পদ নেন। তখন থেকে সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করে বিপুল অঙ্কের টাকার মালিক হন।
বিগত ২৩ বছর তিনি সোনাইমুড়ীর বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থেকে ২ টি বিলাশ বহুল গাড়ী ক্রয় করেছেন। ঢাকায় ৩ টি বিলাশ বহুল প্ল্যাট কিনেছেন। একেকটি প্ল্যাটের মূল্য কয়েক কোটি টাকা। কানাডায় তার সহোদরের মাধ্যমে ২ টি বাড়ী ক্রয় করেছেন। তার গ্রামের বাড়ী সোনাইমুড়ী পৌরসভার শিমুলিয়া গ্রামে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। পৌর এলাকায় সোনাইমুড়ী বাজার, কলেজ রোডে জমিলা মেমোরিয়াল নামে তার মালিকানাধীন ১ টি হাসপাতাল রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে ঢাকার পশ্চিম ধানমন্ডি ঝিকাতলায় ২২৭/৩, এ-৫, রোড নং- ১৯ ঠিকানায় ১ টি বাড়ী রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে একাউন্টে রয়েছে বিপুল পরিমাণের টাকা। রয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের কৃষি জমি।
নোয়াখালীর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপ -পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সম্পদের তদন্ত করছে নোয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অতি শীঘ্রই তদন্ত করে প্রতিবেন দাখিল করা হবে।
সচেতন মহলের দাবী, বছরের পর বছর ধরে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য খাতে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছে, কিন্তু কেউই এসব নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় নাই, তবে দুদকের এই পদক্ষেপে কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা ফিরবে বলে আশা তাদের।
এ বিষয়ে ডাক্তার মাইনুল ইসলাম কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে, তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, তার বিরুদ্ধে দুদকে একটি অভিযোগ হয়েছে তিনি জেনেছেন। নোয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের সদস্যরা সরেজমিনে এসেছেন।









