মাদক বিরোধী অভিযান বন্ধে আন্তর্জাতিক কোন চাপ আছে কিনা, এমন প্রশ্নে জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন: আমরা কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করবো না। জাতিসংঘের অবজারভেশন করার অধিকার আছে, অবজারভেশন করুক। আমাদের যেকোনো বিদেশী বন্ধু দেশও যদি মনে করে অবজারভেশনের দরকার আছে করতে পারে। আমরা কারও চাপের কাছে নতিস্বীকার করবো না। আমরা নতিস্বীকার করবো বাংলাদেশের জনগণের চাপের কাছে। এই মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য যতোদিন প্রয়োজন হবে অভিযান চলবে।
সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেট্রোরেল রুট-৬ নির্মাণ প্রকল্পের প্যাকেজ-৭ এর চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মাদক বিরোধী অভিযানে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক নিহতের ঘটনায় ওবায়দুল কাদের বলেন: একরাম কে, এই প্রশ্নের জবাব চাই। সে আমাদের যুবলীগের সভাপতি। আমাদের লোক আমরা মেরে ফেলবো? একরামের ব্যাপারটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন-আমি বলেছি। যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় একরাম নির্দোষ, তাহলে তাকে যারা দোষী সাব্যস্ত করেছে, তারাই দোষী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন: নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় কি র্যাবের বড় অফিসার বাদ গেছে? ফাঁসির অর্ডার পর্যন্ত হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখুন।
অভিযান বন্ধে বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতির জবাব দেন কাদের। বলেন: বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতি দিতে পারেন, সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু আমরা মনে করছি এই মাদক বিরোধী অভিযান সর্বাত্মক রূপ নিয়েছে। দেশের জনগণ এ অভিযানে খুশি। তরুণ সমাজকে ধ্বংস করছে যে মাদক, সুনামির মতো যে মাদক বাংলাদেশের পাড়া মহল্লায় ছড়িয়ে পড়েছে, এ মাদেকের সর্বনাশা ছোবল থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করার জন্য এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
‘‘কাজেই সামালোচকরা সমালোচনা করুক, আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি জনগণের দিকে তাকিয়ে, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে। তরুণরাই হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যত। এরা নষ্ট হয়ে গেলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে আমরা এ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি, দেশের স্বার্থে-জনগণের স্বার্থে।’’
রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে সরকার মাদক বিরোধী অভিযানে নেমেছে, বিএনপির এমন অভিযোগর পরিপ্রেক্ষিতে কাদের বলেন: বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে অভিযোগ ও নালিশের রাজনীতি। তাদের আর কোনো সম্বল নেই। তারা শুধু অভিযোগ করতে জানে নালিশ করতে জানে। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি, এখন তারা সেই ভুলের খেসারত দিচ্ছে। আন্দোলন করতে চেয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে। এখন তাদের সামনে শুধু হতাশার ছবি। এ কারণেই তারা এখন হতাশা থেকে আবোল-তাবোল বলছে।
এরকম একটা অভিযান যখন জনগণের প্রসংশা কুড়াচ্ছে, জনগণ যখন খুশি সরকারের জনপ্রিয়তা যখন বাড়ছে স্বাভাবিক কারণে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। অভিযানের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে এটা তারা সইতে পারছে না এটা তারা হজম করতে পারছে না। সে কারণেই তারা এ অভিযানের বিরুদ্ধে যা খুশি তাই বলে বেড়াচ্ছে। আসলে হতাশা থেকেই তারা আবোল-তাবোল বলছে তাদের রাজনীতিতে মিথ্যাচার করা ছাড়া আর কোন পুঁজি নেই। তাদের নেতিবাচক রাজনীতি আজ দেশের মানুষের কাছে ধরা পড়ে গেছে। তাদের গ্রহণযোগ্য সংকুচিত হচ্ছে দেশবাসীর কাছে শুধুমাত্র নেতিবাচক রাজনীতির কারণে।’’