১৯৭৫ সালের ১৫আগস্ট সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় স্বেচ্ছায় প্লাজমা-রক্তদান কর্মসূচি, ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। আজ সকাল সাড়ে ১০ টায় ধানমন্ডি-৩২,বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস-২০২১ পালন উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোয় ও মোনাজাত সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি কৃষকরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি।
প্রধান অতিথির ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষক রত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি, বঙ্গবন্ধুর পরিবার, শেখ ফজলুল হক মনি, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সহ ১৫ আগস্টের সকল হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি জার্মানিতে বসে হত্যাকান্ডের খবর জেনে তখনকার মনের অবস্থা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রহিত করার জন্য খন্দকার মোশতাক-জিয়া সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারী করে ২১ বছর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখে। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিত করে এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অবশেষে বিচারকার্য সম্পন্ন হলেও দেশি বিদেশী ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকরী করতে বিলম্বিত হয়। এখন পর্যন্ত কয়েকজন বিদেশে অবস্থান করায় রায় বাস্তবায়ন করা যায় নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ কৃষক লীগ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছে। কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের করোনা কালে কৃষকের পাশে দাড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সহযোগীতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষক লীগের ভ‚মিকার ভ‚য়ষী প্রসংশা করেন এবং প্লাজমা-রক্তদান ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি সফলতা কামনা করেন।
সভার সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, এরকম হাজার হাজার প্লাজমা-রক্তদান ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির মাধ্যমে জাতির পিতার রক্তের ঋণ কোন দিনই শোধ হবে না। এই আগস্ট হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ ও জাতির কল্যাণে ত্যাগের মহিমায় নিজেকে উৎর্সগ করার শপথ নেওয়ার মাস। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। এই আগস্ট থেকে আগামী আগস্ট পর্যন্ত দেশ ও কৃষক সমাজের জন্য কাজ করে নিজেদের উৎসর্গ করাই হবে আজকে বাংলাদেশ কৃষক লীগের সকল নেতা-কর্মীদের শপথ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে বলেছেন “রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব”। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ঋণ পরিশোধ করে গেছেন। বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতি বছর ১লা আগস্ট বঙ্গবন্ধুর রক্ত ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু আজীবনের স্বপ্ন ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্রমান্বয়ে ক্ষুধামুক্ত সহ গরীব-দুঃখী মানুষের অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য সংস্থান করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে সব পাওয়ার দেশে পরিনত করবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জিয়া-মোশতাকের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতায় হত্যা করে জাতির অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্থ করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফিরে তিনি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শুরু করেন। তিনি আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মধ্যে দিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করেন। তিনি কৃষক লীগের ভ‚য়ষী প্রসংশা করেন এবং প্লাজমা রক্তদান কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এর হত্যাকান্ড ছিলো সম্পূর্ণরূপে একটা ষড়যন্ত্র এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সকল অর্জনকে ধুলিসাৎ করার একট নীল নকশা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষকরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে তাদের সেই নীল নকশা আজ ধুলায় পর্যবশিত হয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, এ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।