বিএনপি’র ৮ নেতার সম্পদের খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নানা অভিযোগের ভেতরেই দলটির শীর্ষ আট নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি। তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোমবার দুদকের উপ-পরিচালক ঋত্বিক সাহা স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এরইমধ্যে অনুসন্ধানের জন্য দুদক দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা করেছে। যারা হলেন উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম, সহকারী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন।
যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তাঁরা হলেন স্থায়ী কমিটির চার সদস্য—খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মির্জা আব্বাস; দুই ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও এম মোর্শেদ খান; যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। এ ছাড়া এম মোর্শেদ খানের ছেলে ফয়সাল মোর্শেদ খানের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান হচ্ছে।
সূত্র জানায়, একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে খবর প্রকাশ হয়, ৩০ দিনে এসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব থেকে ১২৫ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। সেই সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনটি বেসরকারি ব্যাংকে আবদুল আওয়াল মিন্টুর অ্যাকাউন্ট থেকে গেলো ১১, ১৫ এবং ২০শে ফেব্রুয়ারি ৩২ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। একই মাসে তার সন্তান তাবিথ আওয়ালের অ্যাকাউন্ট থেকে সন্দেহজনকভাবে উত্তোলন করা হয় ২০ কোটি টাকা।২৭শে ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেতা মোর্শেদ খানের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। তার ছেলে ফয়সাল মোর্শেদ খানের অ্যাকাউন্ট থেকেও গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি উত্তোলন করা হয় ৯ কোটি টাকা।ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গত ৩ মার্চ থেকে ১২ই মার্চের মধ্যে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ২১ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। তার অ্যাকাউন্টের ছয়টি চেকে টাকা তোলা হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে।গেলো ২৮শে ফেব্রুয়ারি এবং ৪ মার্চ ঢাকা ব্যাংকে মির্জা আব্বাসের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৬ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়।এছাড়া, নজরুল ইসলাম খান এবং হাবিবুন্নবী খান সোহেলের অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে ৭ কোটি টাকা ‘সন্দেহজনক লেনদেন’ হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দু-একটি ‘হাওয়াই অনলাইনে’ প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে দুদক অনুসন্ধান করছে, তার কতটা ভিত্তি আছে? তিনি বলেন, ‘যে ব্যাংকের লেনদেনের কথা বলা হয়েছে, সেখানে আমার বা আমার পরিবারের কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কখনোই ছিল না, এখনো নেই।’
দলের আরেক শীর্ষ নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যাঁরা রাজনীতিতে সক্রিয়, তাঁদের চাপে রাখতে সরকারের একটি কৌশল। শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসেবে যাঁরা পরিচিত, তাঁদের না ধরে আমাদের নিয়ে দুদক কেন টানাটানি করছে, সেটা সবাই বোঝে।’