ছাত্রলীগ ক্রমান্বয়ে কসাইয়ে পরিণত হয়েছে: রিজভী
বই-খাতা-কলম ছুঁড়ে ফেলে ছাত্রলীগ যে ক্রমান্বয়ে কসাইয়ে পরিণত হয়েছে তার প্রমাণ গত রাতের রক্তাক্ত ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগদানকারী ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে হল ছাত্রলীগের নেত্রীরা। মোর্শেদা নামের এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগ হল শাখার সভানেত্রী জড়িত। রাতে ঢাবির হলে হলে ঢুকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বেছে বেছে নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ।
বুধবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনগতভাবে বেগম জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা পাওয়ার অধিকারী অথচ সে সুযোগ তাকে দেয়া হচ্ছে না। এখানেই সরকারের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার ষড়যন্ত্র রয়েছে।
তিনি বলেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে বেগম খালেদা জিয়াকে যে এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছে তা মামুলি ব্যাপার মাত্র। তাকে এমআরআইসহ আরও আধুনিক পরীক্ষা করলে বোঝা যেত তার প্রকৃত স্বাস্থ্যগত অবস্থা কি। এ অবস্থায় একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার ওপর এহেন নির্যাতন এবং নির্দয় ব্যবহার শুধুমাত্র সরকার প্রধানের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা ছাড়া অন্য কোন কারণ নেই। কারণ জামিন পাওয়ার পরও তার জামিন আটকে দেয়া হয়েছে সরকার প্রধানের নির্দেশেই।
সরকারের মন্ত্রীদের লাগামহীন বক্তব্যের কারণে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ সরকারের তল্পিবাহক ছাড়া কোন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেননি। সরকারের কাছে নিজেদের বিবেককে অঞ্জলি দিয়েছেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারি বাহিনী ও ছাত্রলীগের যে তাণ্ডবলীলা চলছে সেটির তীব্র ধিক্কার ও নিন্দা জানান তিনি।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, শিক্ষা বিনাশী সরকার আওয়ামী মহাজোট সরকার- এরা মেধাবী লোক পছন্দ করে না। এই কারণেই এদের সময় সকল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, খাতায় কিছু না লিখেও ‘এ’ প্লাস পাওয়া যায়। এরা ক্ষমতায় আসার পর দেশের শিক্ষাঙ্গন দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য ছাত্রলীগ ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য ইত্যাদিতে রমরমা বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। আর এগুলো জারি রেখেই শেখ হাসিনা জনগণকে চোখ রাঙানি দিয়ে অপশাসনের পৌষ মাস চালিয়ে যাচ্ছে। আসলে প্রধানমন্ত্রীর চোখে চিরকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকার স্বপ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।