বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরতর অসুস্থ্য তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায় সরকারকেই বহন করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য কারাগারে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা যে খবর পাচ্ছি তাতে সারাদেশ জাতি উৎকন্ঠিত। গতকাল (শুক্রবার) তাঁর পরিবারের সদস্যরা পূর্ব সিদ্ধান্তে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। তার আগের তারিখে (বৃহস্পতিবার) আমিসহ আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খানকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, অথচ সুস্পষ্টভাবে কোনো কারণ দেখানো হয়নি। প্রায় ১০ দিন যাবত পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং দল দেশনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পায়নি। এতে করে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
শনিবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্র সূত্রে জানতে পেরেছি যে, সরকার কর্তৃক গঠনকৃত একটি মেডিকেল টিম তাঁকে পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে প্রফেসর মালিহার রশীদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি মেডিকেল টিম তাঁকে দেখতে যান। আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে আরও জানতে পেরেছি যে, তিনি বেশ কিছু ব্যাধিতে আক্রান্ত, এর মধ্যে এক্যুইট রিউমেটিক আর্থারাইটিস তাঁকে বেশ কষ্ট দিচ্ছে। তাঁরা অবিলম্বে তাঁর পছন্দনীয় হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছেন। বিশেষ করে কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা এবং এম আর আই পরীক্ষা তাঁর জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। অথচ এ ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে কোন বক্তব্য আমাদের দেননি বা জাতির সামনে তুলে ধরেননি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের গণমানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। মিথ্যা সাজানো মামলায় তাঁকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাঁকে এবং তাঁর দলকে রাজনীতি থেকে দুরে সরিয়ে দেয়া। গণবিচ্ছিন্ন ও রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া সরকারের ২০১৪ এর মতো একতরফা নির্বাচনের প্রহসনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতা দখলই হচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য। আইনের বিধানকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে দেশনেত্রীকে জামিন না দেয়ায় কারাগারে তাঁর প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা-এটা অমানবিক। যে কারাগারে, যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছে তা সংবিধান পরিপস্থি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি ডাক্তারদের সুপারিশকৃত অর্থপেডিক বেডরুম তাঁকে সরবরাহ না করা, তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে তাঁর চিকিৎসা না করানো, দলের নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যদের তাঁর সঙ্গে দেখা না করতে দেয়া অত্যন্ত হীনউদ্দেশ্যমূলক। সরকারের মন্ত্রীদের এ বিষয়ে মন্তব্য এবং কটুক্তি সকল শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিস সরোয়ার প্রমুখ।