বগুড়ার শাজাহানপুরে যুবদল নেতার মারপিটে পা হারানো মানসিক প্রতিবন্ধী মেহেদী হাসান ওরফে রাজু (৩০) আর নেই।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগে ৫ অক্টোবর বিকেলে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়।
নিহত মেহেদী হাসান শাজাহানপুর উপজেলার চোপীনগর ইউনিয়নের শাহনগর বিলায়েতপাড়া গ্রামের দিনমজুর আজাহার আলী ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, মেহেদী হাসান মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনি ঝোপ-ঝাড়ে বাঁশের কঞ্চির খুঁটি গেড়ে প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর বানিয়ে থাকতেন। গত ২০ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেহেদী হাসান বাড়ির অদূরে বাঁশঝাড়ের ভেতর গিয়ে দেখতে পান, তার ঝুপড়িঘরে বসে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একাধিক নাশকতা মামলার আসামি মারুফ হোসেনসহ ৪-৫ জন আড্ডা দিচ্ছেন।
তখন তাদেরকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন তার ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরের দিন ২১ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন লাঠি দিয়ে প্রতিবন্ধী মেহেদী হাসানকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। একপর্যায়ে পিটিয়ে মেহেদীর ডান পায়ের হাঁটুর নিচে থেতলে দেন ও ভেঙে ফেলেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করার পরও পায়ের মাংসে পচন ধরে এবং তা খসে পড়তে থাকে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ৫ অক্টোবর বিকেলে হাটুর উপর পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। এরপর সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বুধবার রাত ১২টার দিকে মেহেদী হাসান মারা যান।
এর আগে মারধরের ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় যুবদল নেতা মারুফ হোসেন আদালতে স্বশরিরে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠান।