ব্যাট, বল ও ডাণ্ডা থেকে আজকের ক্রিকেট – উৎপত্তির ইতিহাস

ব্যাট, বল ও ডাণ্ডা থেকে আজকের ক্রিকেট উৎপত্তির ইতিহাস

ক্রীড়াজগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিশ্বব্যাপী খেলা ফুটবল, বর্তমানে ক্রিকেটও দিনদিন দর্শকপ্রিয় হচ্ছে। মূলত ক্রিকেটের আদি যুগ পার করে আধুনিক যুগে আসার পর থেকেই ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। একসময় ক্রিকেট ম্যাচের দৈর্ঘ্যের কোনো সময়সীমা ছিলো না। একটানা অনেকদিন চলতে থাকতো একেকটা ম্যাচ, তারপর সংক্ষিপ্ত হতে হতে বর্তমানে তিন ঘন্টার ম্যাচে এসেছে ঠেকেছে, যা এখন বেশ জনপ্রিয়।

অনেকের ধারণা ক্রিকেটের পথচলা শুরু হয়েছিলো ১৮৭৭ সালে, কিন্তু ক্রিকেট খেলা ১৮৭৭ সালে শুরু হয়নি। এর প্রচলন ৭ম শতাব্দীতেও ছিলো। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাট বল নামে একটি খেলার প্রচলন ছিলো। সেখানকার পাঞ্জাব অঞ্চলের দোয়াব এলাকার লোকজনরা সর্বপ্রথম ক্রিকেটের মতোই ব্যাট বল নামক একটি খেলার গোড়াপত্তন করে।

ভারতীয় উপমহাদেশের পাঞ্জাব অঞ্চলের দোহাব এলাকার লোকজনদের মাধ্যমে ৮ম শতাব্দীর শেষদিকে খেলাটি প্রসার হয়ে পারস্যের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপেও খেলাটির প্রচলন সম্পর্কে জানা যায়, ৮ম শতাব্দীর পর ৯ম শতাব্দীর শেষদিকে ভারত অঞ্চলের মরুভূমিতে বসবাসকারী নরড্যামিক জিপসিরা সে অঞ্চল ছেড়ে তুরস্ক যায়। তাদের সাথেসাথে খেলাটিও ইউরোপে ছড়িয়ে যায়, সেসময়ে বেশ কিছু অঞ্চলে বল দিয়ে খেলার প্রচলন ছিলো। পৃথিবীর বেশ কয়েকটা অঞ্চলে বল দিয়ে খেলার প্রচলন থাকলেও ব্যাটের সাথে বল দিয়ে খেলতে দেখা যায় শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারতের অঞ্চলের লোকজনদেরকে, সেখানে ব্যাটকে ডাণ্ডা বলা হতো।

এরপর ৯ম দশকে তেমন কোনো উন্নতি সাধন হয়নি ক্রিকেটের, আদি নিয়মেই চলতে থাকে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। ১১৮৩ খ্রীস্টাব্দে জোসেফ অব এক্সেটার নামক লেখকের লেখা থেকে জানা যায় ১০৬৬ খ্রীষ্টাব্দে ইংল্যান্ড বিজয়ের পর নরম্যানরা তাদের বিনোদনের জন্য ব্যাট-বলের খেলা শুরু করে। তাদের দ্বারাই ক্রিকেট প্রসারিত হয়, সেসময়ে বিনোদনের জন্য সপ্তাহে একদিন এই খেলাটি আয়োজন করা হতো। তারা এই খেলাটিকে ক্রিঘ এবং ক্রিকে নাম দিয়ে সপ্তাহের শুধুমাত্র রবিবারেই খেলাটি অনুষ্ঠিত হতো।

খেলাটির ধরন ছিল এরকম – একটি বল একজন ব্যাটসম্যানের দিকে ছুড়ে মারা হতো। ব্যাটসম্যানের ঠিক পেছনেই আজকের স্ট্যাম্পের মতো এক ধরনের কাঠামো থাকতো। ব্যাটসম্যান সেই কাঠামোকে বলের আঘাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার হাতে থাকা কাঠের তক্তা দিয়ে বলটিকে বাড়ি মারতো। ব্যাটসম্যানের বাড়ি মারা বলটিকে ধরার জন্য তার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কয়েকজন ফিল্ডারও থাকতো।

এরপর নেমে আসে ক্রিকেটের অন্ধকার যুগ, ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ করে। সে সময়ে সবাই ছিলো রাজ্য জয়ের নেশায়, ক্রিকেটের কারণে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত সৈনিক পাওয়া যাচ্ছিলো না বলেই রাজা ক্রিকেটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ক্রিকেট খেলতো তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া হতো।

১৫০০ সালের পর ক্রিকেট পুনরায় জনপ্রিয় হতে থাকে, ততদিনে ইউরোপে রাজ্য জয়ের প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে গিয়েছিলো। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের আগে যেই খেলাটির নাম ছিল ক্রিঘ বা ক্রিকে, সেটিই ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে এসে পরিচিতি লাভ করে ক্রিকেট। তখনো ক্রিকেটের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিলো, কিন্তু অলিখিত নিষেধাজ্ঞা নিয়েই ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যায় ইউরোপের জনগণরা।

খেলা নিয়ে মোটা অংকের টাকার জুয়া খেলতো জুয়াড়িরা। তখনো ধর্মযাজকরা এই খেলাটির ঘোর আপত্তি করতে থাকে। তারা আপত্তি জানিয়ে বলে ক্রিকেট হলো অলস, অকর্মন্য আর জুয়াড়িদের খেলা। ধর্মযাজকরা এর বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থাও করেছিল। কিন্তু কোনো বাঁধাই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি ক্রিকেটের চলার পথে।

এরপর আস্তে আস্তে ক্রিকেট খেলা আরো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, ১৭১৯ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দল ও বর্তমান কাউন্টি দল কেন্টের মধ্যকার ম্যাচটির মাধ্যমে।  ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে ১৭২১ সালে আধুনিক ক্রিকেটের প্রচলন শুরু হয়। তবে ১৭৪৪ সালের আগে ক্রিকেট পুরোপুরি আধুনিক হয়ে উঠেনি। কেননা সে সময়ও নিয়ম-কানুন মেনে ক্রিকেট খেলা হতো না। ১৭৪৪ সালে আধুনিক ক্রিকেটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন করা হয় এবং সেই নিয়ম মোতাবেক ক্রিকেট খেলা শুরু হয়।

একসময় হকি স্টিকের ন্যায় কিছু একটা দিয়ে ক্রিকেট খেলা হতো, বর্তমানে তা নিয়মের মধ্যে এনে ক্রিকেটকে আরো আধুনিক করা হয়েছে। বর্তমানে ৪২ টি নিয়ম মেনে ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে ক্রিকেট খেলার প্রচলন হয় ১৮৭৭ সাল থেকে। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলে। ক্রিকেটের জনক হিসাবে ইংল্যান্ডের নাম জোরালোভাবে বলা হলেও প্রথম টেস্ট ম্যাচে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।

মেলবোর্নে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া, সে সময়ে ৪ বলে ওভার হতো এবং ম্যাচের নির্দিষ্ট কোনো সময় ছিলো না। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে, যার মধ্যে ওপেনার চার্লস ব্যানারম্যান একাই ১৬৫ রান করেন। চার্লস ব্যানারম্যান সে সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম রান এবং প্রথম শতকের রেকর্ড তার দখলে আজীবন থাকবে।

জবাবে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ১৯৬ রান গুটিয়ে গেলে ৪৯ রানের লিড পায় অস্ট্রেলিয়া। ২য় ইনিংসে ইংলিশ বোলাররা অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১০৪ রানে অলআউট করে ব্যাটসম্যানদের জয়ের জন্য ১৫৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড় করায়।

কিন্তু ১৫৪ রান করতেও ব্যর্থ হয় ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৮ রানে অলআউট হয়ে ৪৫ রানে পরাজিত হয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে।

আস্তে আস্তে ক্রিকেট আরো উন্নত হতে থাকে, ক্রিকেটের আইনকানুন, বিধিনিষেধ সবকিছু ঠিক করার জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে ‘ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৯ সালে। পরে ১৯৫৬ সালে ইম্পেরিয়াল কথাটি পরিবর্তন করে ইন্টারন্যাশনাল  শব্দটি যোগ করে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’ রাখা হয়। যা আইসিসি নামেই বেশি প্রসিদ্ধ।  বর্তমানে ক্রিকেটের সব নিয়মকানুন আইসিসির কর্তৃক নির্ধারিত।

শুরুর দিকে যেহেতু ক্রিকেট ম্যাচ ছিলো অনির্দিষ্টকালের, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ম্যাচের মাঝখানে লম্বা সময় ধরে বিরতি থাকতো। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের পুরানো রেকর্ড নিয়ে দর্শক এবং আয়োজকদের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়।

এবং ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা দিনদিন হ্রাস পেতে থাকে, অবস্থা বেসামাল দেখে দর্শক ফিরিয়ে আনা ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে রাগনেল হার্ভের উদ্যোগে রথম্যানস কো. ৪০ ওভারের একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে। এই খেলাটিও অনুষ্ঠিত হতো রোববারে। তাতে খেলতেন কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে চলতি ও প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড়দের সম্মিলনে গড়া ইন্টারন্যাশনাল কার্ভেলিয়ার্স।

এতে করে ক্রিকেট তার হারানো জৌলুশ ফিরে পায়। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে জিলেট কাপ নামে ৬০ ওভারের এক টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ইংল্যান্ডে। এই টুর্নামেন্টই ১৯৮১ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি নামে পরিচিতি লাভ করেন।

১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের তৃতীয় টেস্টের প্রথম তিন দিন বৃষ্টিতে ভেগে গেলে ম্যাচ অফিসিয়ালরা ঐ ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে চায়। কিন্তু পরবর্তীতে পরিত্যক্ত না করে একদিনের ম্যাচের প্রচলন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড।

টেস্ট ক্রিকেটের মতো প্রথম একদিনের ম্যাচও মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল ও একই, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়। এবার অবশ্য টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ৪০ ওভারের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার এড্রিকের ৮২ রানের উপর ভর করে ১৯০ রান সংগ্রহ করেছিলো ইংল্যান্ড। তখন অবশ্য এখনকার মতো ৬ বলে ওভার ছিলো না, একেকজন বোলার টানা ৮ বল করে করতো। জবাবে ইয়ান চ্যাপেলের ৬০ রান এবং ডফ ওয়াল্টার্সের ৪১ রানের উপর ভর করে ৫ উইকেট এবং ৫ ওভার ২ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

এরপর থেকেই জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে একদিনের ক্রিকেটে, ১৯৭৫ সালে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ক্রিকেটের আরো জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং ব্যবসা সফল করার তাগিদে টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচের যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে।

একদিনের ম্যাচের চেয়ে টি-টুয়েন্টি ম্যাচ দ্রুত শেষ হওয়ার কারণে খুব দ্রুতই দর্শক টেনে নেয় টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচে মোকাবেলা করে দুই প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। টেস্ট এবং ওডিয়াইয়ের মতো প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচেও জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।

এবারও টস জিতে অস্ট্রেলিয়া, শুধুমাত্র তিন ফরম্যাটের সবকটি উদ্বোধনি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জয় পায়নি সেইসাথে ঐসব ম্যাচের সবগুলোর টসও জিতে অস্ট্রেলিয়া। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার মাইকেল ক্লার্ক এবং গিলক্রিস্ট দ্রুত ফিরে গেলেও অধিনায়ক রিকি পন্টিং রানের চাকা সচল রাখে সায়মন্ডস, মাইক হাসি এবং সাইমন ক্যাটিচদের সাথে নিয়ে। অধিনায়ক রিকি পন্টিং একাই করে ৫৫ বলে ৯৮* রান। তার দুর্দান্ত ইনিংসের সহায়তায় ৫ উইকেটে ২১৪ রানের পাহাড়সম রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে কাস্পোরিউইক্সের বোলিং তোপের মুখে পড়ে নির্ধারিত লক্ষ্য থেকে ৪৪ রান দূরে থাকতেই অল আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হয়ে স্কট স্টাইরিসের ৬৬ রান এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ৩৬ রান ছাড়া উল্লেখযোগ্য আর কোনো ইনিংস খেলতে পারেনি অন্য কোনো ব্যাটসম্যান।

প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচের পর ক্রমশ এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। দর্শকপ্রিয়তা দেখে ২০০৭ সালে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়। সাউথ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টুয়েন্টিতে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ভারত। এরপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন দেশে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টুয়েন্ট লীগ। টেস্ট এবং ওডিয়াই এর চেয়ে টি-টুয়েন্টিতে দর্শক এবং আর্থিক লেনদেন দুটোই বেশি।

ক্রিকেটের উন্নতির বাতাস কিছুটা হলেও বাংলাদেশের গায়ে লাগে, মুক্তিযুদ্ধের আগে বাংলার জুয়েল, মোস্তাকদের ক্রিকেটের প্রতি টানের গল্প অনেকেই জানেন। বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি এবং একসময়কার জনপ্রিয় খেলা ফুটবলকে ছাড়িয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যবসা সফল খেলা হচ্ছে ক্রিকেট।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে নিজস্ব ক্রিকেট খেলা আয়োজনের ব্যবস্থা গড়ে উঠে। এ সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হয় বাংলাদেশে। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ঘটে। সেবার ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে আবির্ভাব হয় নতুন এক নক্ষত্র বাংলাদেশের।

১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলে এবং ১৯৯৭ সালে কেনিয়াকে শেষ বলে হারিয়ে আইসিসি ট্রফি জেতে এবং এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। পরের বছরেই টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসাবে আবির্ভাব হয় বাংলাদেশের, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মর্যাদার খেলা টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ছিলো ভারত।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম পরাশক্তি হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, তার পরপর পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ, ভারত এবং সাউথ আফ্রিকাকে সিরিজ হারানো জ্বলজ্বল করে জ্বলবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে। তথ্যসূত্রঃroar.media