তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশ নির্বাচনের

তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশ নির্বাচনের

Khulna City Corporation

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। বাকি মাত্র ৪৪ দিন। এদিকে তফসিল ঘোষণার পরপরই তৎপর হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। শহরে লেগেছে নির্বাচনী হাওয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সবখানেই এখন নির্বাচনী হাওয়া।

নির্বাচন সামনে রেখে বড় দু’দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। নিজেদের প্রচারের জন্য ইতিমধ্যে পোস্টার লিফলেট ছাপানোর কাজও শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের তৎপরতা চোখে পড়ছে বেশি। প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় প্যানা পোস্টার লাগানোর হার বাড়িয়ে দিয়েছেন। ২৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর টিপু বলেন, ‘জনগণের জন্য কাজ করেছি। দলমত নির্বিশেষে সব মানুষকে সমানভাবে মূল্যায়ন করেছি। আশা করছি,

দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’ কেসিসির ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মো. মাহবুব কায়সার বলেন, ‘আমি পরপর দু’বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি দল এবারও আমাকেই মনোনয়ন দেবে। তবে নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। নির্দেশনা দিলে সেভাবেই কাজ করব।’ তবে কাউন্সিলরদের ছাপিয়ে বারবার সামনে চলে এসেছে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে এবার কারা লড়ছেন? যদিও বিএনপি থেকে বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নাম অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে আছে। তারপরও তার পরিবর্তন চায় জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা প্রার্থী হতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে তিনি গত কয়েক বছর ধরেই নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন। নির্বাচনের বিষয় নিয়ে বর্তমান সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি আশা করি অবশ্যই দলের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে আমার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। মামলা, হামলা, নির্যাতন সহ্য করেও গত ৫ বছর নগরপিতার দায়িত্ব পালন করেছি। নগরবাসীর সেবা দিতে সচেষ্ট ছিলাম।’

এদিকে এখনও পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীর নাম এককভাবে শোনা যাচ্ছে না। একাধিক নেতা দলের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক এমপি কেসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণে অনীহা প্রকাশ করায় আগ্রহী প্রার্থীদের তালিকা বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, নগর যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু, দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী। কে হবেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। নগরবাসী তাকিয়ে আছে বড় দুই দলের হাইকমান্ডের দিকে। নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক এমপি বলেন, ‘প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য দলের হাইকমান্ড রয়েছে। অনেকেই প্রার্থী হতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক। হাইকমান্ড প্রার্থী বাছাই করে ঘোষণা দিলে তবেই প্রার্থীরা তৎপরতা চালাবেন।’ অন্যদিকে প্রার্থী ঠিক করে রেখেছে জাতীয় পার্টি। দলটিতে নতুন যোগ দেওয়া এসএম মুশফিকুর রহমান মুশফিককে করা হয়েছে কেসিসির মেয়র প্রার্থী। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা সিটি কর্পোরেশন। ১৯৮৪ সালে এটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ৪৫ দশমিক ৬৫ বর্গকিলোমিটার। গত বছরের অক্টোবরের হালনাগাদ হিসাব অনুযায়ী কেসিসিতে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৫ হাজার। গত নির্বাচনে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৬ জন। ভোটার বেড়েছে ৬৪ হাজার ৪৪৪ জন। বৃদ্ধি পাওয়া ভোটারদের মধ্যে নারী ভোটার ৩ হাজার ৩৯৫ জন এবং পুরুষ ২ হাজার ৯৩০ জন। তবে গেল অক্টোবরের পর যেসব ভোটার মারা গেছেন বা নতুন করে ভোটারের জন্য আবেদন করেছেন তাদের তালিকা এখনও হালনাগাদ করেনি নির্বাচন অফিস। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী যুগান্তরকে বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের জন্য কমিশন শতভাগ প্রস্তুত। পর্যায়ক্রমে সব কাজ সম্পন্ন করা হবে।