শতবছর আগে ফরিদপুরের যে জনপদকে শিক্ষিত ও আলোকিত হিসেবে গড়ার কাজ প্রয়াত কাঞ্চন মুন্সী শুরু করেছিলেন, আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর সেই জনপদকে ‘মডেল’ হিসেবেই গড়তে চান তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি আরিফুর রহমান দোলন।
এই মহৎ স্বপ্ন-পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে ভোটে লড়ছেন কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন। তিন উপজেলার জনগণের মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী দোলনের মনোনয়ন এরইমধ্যে বৈধ ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটের লড়াইয়ে নামার পর দোলনকে নিয়ে ফরিদপুর-১ আসনজুড়ে ইতিবাচক আলোচনার শেষ নেই। বিশেষ করে গত দুই দশক ধরে আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর মানুষের জন্য দোলনের একের পর এক উদ্যোগ তাঁকে আর সব প্রার্থীর থেকে ব্যতিক্রম করে তুলেছে।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী হিসেবেও সফল। তিনি সংবাদমাধ্যমহ নানান প্রতিষ্ঠান গড়ে শিক্ষিত ও বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
গত দুই বছর ধরে দোলন তাঁর নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুর-১ আসনে পথসভা, উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কাজের প্রচার করেছেন। সরকারের উন্নয়ন প্রচারে সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করেছেন। তাঁর এসব কর্মসূচির সঙ্গে ছিলেন তিন উপজেলার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
গত দুই দশক দোলন নিজেকে সম্পূর্ণ নিবেদন করেছেন ফরিদপুর-১ আসনের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে। প্রপিতামহ কাঞ্চন মুন্সীর মানবকল্যাণের আদর্শকে পাথেয় করে গোটা অঞ্চলের মানুষের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী তিন উপজেলাতেই বিস্তৃত দোলনের কর্ম-তৎপরতা।
দোলনের গড়া কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশন গোটা অঞ্চলের ১৫ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের চোখের চিকিৎসা, ২০ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে ছাতা বিতরণ, ৩ হাজারের বেশি শিক্ষিত বেকার ছেলে মেয়েকে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
এছাড়াও মহামারী করোনার সময় কয়েক হাজার সুবিধাবঞ্চিতের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রীও বিতরণ করে কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশন। জনপ্রতিনিধি না হয়েও দোলন সবসময় ফরিদপুর-১ আসনের মানুষের যেকোনো সংকটে পাশে ছিলেন।
শিক্ষামূলক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নানা প্রতিষ্ঠান গঠনেও দোলনের ভূমিকা অসামান্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঈদগাহ, কবরস্থান ও শ্মশানসহ অন্যান্য স্থাপনা সংস্কারেও দোলনের বহুমুখী উদ্যোগ আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর লাখো মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ফরিদপুর-১ আসনের মানুষের জীবনমান আরও উন্নত, আরও কর্মমূখর করার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে নানামাত্রিক ভূমিকা রেখে চলেছেন দোলন। তিনি জোর দিয়েছেন মানুষের স্বনির্ভরতা বিশেষ করে কর্মসংস্থানের ওপর। হাজার হাজার তরুণ, শিক্ষিত ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন জীবিকার সংস্থান।
স্থানীয়রা বলছেন, ফরিদপুর-১ আসনের তিন উপজেলার রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য দোলন দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেপথ্য ভূমিকায় আলফাডাঙ্গায় নির্মিত হয়েছে পাঁচশ আসন বিশিষ্ট বহুমুখী মিলনায়তন বা মাল্টিপারপাস হল। এছাড়া দোলনের একান্ত প্রচেষ্টায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অশেষ কল্যাণে আলফাডাঙ্গায় নির্মিত হয়েছে সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)।
শিক্ষানুরাগী দোলন প্রতিষ্ঠা করেছেন বেগম শাহানারা একাডেমি। এখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। মধুখালীর বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ স্মৃতি কমপ্লেক্সের অধিকতর উন্নয়নসহ দোলনের অন্যান্য সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড মানুষের মুখে মুখে।
ফরিদপুর-১ আসনের জনগণ বলছেন, তিন উপজেলায় মানুষের নানা সঙ্কটে দোলন সবসময় পরমাত্মীয়ের মতো পাশে থাকেন। তাই দোলন এক নির্ভরতার নাম। অন্য প্রার্থীদের নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও দোলনের প্রতি মানুষের আস্থা-ভরসা প্রশ্নাতীত।
দোলন শুধু শিক্ষা, উন্নয়ন, মানবসম্পদেই ভূমিকা রাখছেন না, অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবেও তিনি দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে চলেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি জঙ্গি বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমাসহ জেএমবির মুখোশ উন্মোচন করেছেন। জঙ্গি তৎতপরতার বিরুদ্ধে দোলনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও নজিরবিহীন তৎপরতা শুধু দেশ নয় আন্তর্জাতিক মহলেও প্রসংশিত হয়েছিল।
তরুণ রাজনীতিক দোলনের স্লোগান ‘মানুষের কাছে মানুষের পাশে।’এই স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিয়ে আসছেন ফরিদপুর-১ আসনের মানুষের প্রিয় নেতা আরিফুর রহমান দোলন। তারা আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটে দোলনকে বিজয়ী করে দিতে চান প্রতিদান।
আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর সাধারণ জনগণ বলেন, উন্নয়ন ভাবনার বাস্তবায়ন এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে ফরিদপুর-১ আসনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে দোলনই এই আসনের এমপি হওয়ার যোগ্য।
প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী রহমান ও জাফর বিতর্কিত
দোলনের প্রতিদ্বন্দ্বিদের মধ্যে আগের দুই বারের এমপি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহমানকে নিয়ে এলাকার মানুষের অনেক অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, কাবিখার অর্থ লোপাট, স্বজনপ্রীতি, সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল, মাদক-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সখ্যতার কথা মুখে-মুখে ছড়ানো।
এসব অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনার মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পাননি আব্দুর রহমান। আর এবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও এখনও পর্যন্ত এলাকায় নৌকার এ প্রার্থীকে নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহই নেই ফরিদপুর-১ আসনের ভোটারদের মধ্যে।
আরেক প্রার্থী শাহ মো. আবু জাফর নির্বাচনে অংশ নিতে নতুন নিবন্ধন পাওয়া বিএনএমে (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন) যোগ দিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। একের পর এক দল বদলের ফলে তার নামের সঙ্গে জুড়েছে ‘ডিগবাজি’।
শাহ মো. আবু জাফর ১৯৭৯ সালে ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে এবং ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হন। ২০০৩ সালে জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগ দেন।
২০০৫ সালের উপনির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে সংসদ সদস্য হন তিনি। এতদিন তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। সবশেষ ডিগবাজি দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএমে যোগ দিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন শাহ আবু জাফর।