বজ্রপাতে বাবা-ছেলে স্কুলছাত্রসহ ১২ জনের মৃত্যু

বজ্রপাতে দেশের ছয় জেলায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে সিরাজগঞ্জে বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন, মাগুরায় তিনজন, নোয়াখালী, নওগাঁ, গাজীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন করে রয়েছেন। বজ্রপাতে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলার অন্য এলাকায় মারা গেছেন আরও তিনজন।কাজীপুরে মারা যাওয়ারা হলেন বাবা শামসুল হক ও ছেলে আরমান খান।

স্বজনরা জানান, সকালে উপজেলার তেকানী চরে সামছুল (৪২) হক ও তার ছেলে আরমান (১৪) বাদাম ক্ষেতে কাজ করতে যায়। কিছুক্ষণ পর ঝড় ও বজ্রবৃষ্টি হয়। ঝড়ের সময় ক্ষেতে কাজ করছিল তারা। এ সময় বজ্রপাতে তারা মারা যান।

জেলার কামারখন্দ উপজেলার পুস্পপাড়ায় ধান কাটার সময় কাদের হাসান নামে এক কৃষক বজ্রপাতে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এছাড়াও দুপুর ১২টার দিকে ঝড়ের সময় বজ্রপাতে শাহজাদপুর পৌর এলাকার ছয়আনী পাড়া মহল্লায় নাবিল (১৭) ও পলিন (১৫) নামে দুই কিশোর মারা গেছে। তারা বাড়ির বাইরে খেলা করছিল বলে স্বজনরা জানান।

মাগুরায় বজ্রপাতে ৩ জন মারা গেছেন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুপুরে সদর উপজেলার আমুড়িয়া গ্রামে মাঠের মধ্যে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় রশিদ মোল্লার ছেলে আলম মোল্লা বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। একই সময় শালিখার সীমাখালিতে মোবাইল টাওয়ারে কাজ করার সময় বজ্রপাতে টাওয়ার থেকে পড়ে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরের আলতাফ হোসেনের ছেলে মেহেদী হোসেন আহত হন। তাদেরকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা সদরের আঠারখাদা এলাকায় বজ্রপাতে অজ্ঞাত পরিচয় এক ভ্যান চালক ঘটনাস্থলে মারা যান। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

নোয়াখালীর মাইজদীতে খেলার মাঠে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছে এক স্কুলছাত্র। তার নাম মো. পিয়াল। পিয়াল পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মো. সোহেল রানার ছেলে ও নোয়াখালী জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বশিরার দোকান এলাকার একটি মাঠে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় পিয়াল মারা যায়।নওগাঁর সাপাহারে বজ্রপাতে এক গৃহবধূ মারা গেছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিন জন।

সকাল ৮টায় বাড়িতে রান্না করছিলেন উপজেলার শিমুলডাঙ্গা রামাশ্রম গ্রামের সোনাভান (২২)। এ সময় বজ্রপাতে তিনি মারা যান।সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুল আলম শাহ বলেন, বজ্রপাতে সোনাভানের স্বামী রুবেল হোসেন (২৮), একই বাড়ির সালেহা বিবি (৪২) ও রাজু (১২) নামে এক শিশু আহত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ধান কাটার সময় বজ্রপাতে আব্দুর রহিম (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা এলাকায় বজ্রপাতে জাফরুল ইসলাম (২০) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন। তারা হলেন সৌরভ, মনি সামান্ত, লতা, আলেয়া ও তাপসী।

সকাল ৮টার দিকে মাটিকাটা এলাকায় ইনক্রেডিবল ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জাফরুল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার হরিনাথপুর এলাকার মো. আব্বাস আলীর ছেলে। তিনি ওই কারখানার চেকম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।