মাদকবিরোধী চলমান অভিযানে যারা নিহত হচ্ছেন তারা সবাই অস্ত্রধারী এবং তারা গুলি করার পর পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি করছে বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের।
কথিত বন্দুকযুদ্ধকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ বলে মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এবং বিএনপির পক্ষ থেকে যে অভিযোগ এসেছে, সেটিও উড়িয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের । তার দাবি, যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেটা বিচারবহির্ভূত হত্যা নয়, এটা এনকাউন্টার। পুলিশ আক্রান্ত হয়ে গুলি করছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনেউতে সড়ক নিরাপত্তা ক্যাম্পেইন এবং বিআরটিএ পরিচালিত মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মাদকবিরোধী অভিযানে মৃত্যুর বিষয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ যাদের ধরতে যাচ্ছে, তাদের কাছে তো অস্ত্র রয়েছে। সেখানে কি তাহলে পুলিশ ‘জুঁই ফুলের’ গান গাইবে? কাউন্টার করবে না?’
গত ৪ মে থেকে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে এখন অবধি ৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে। গত চার দিনেই এই সংখ্যা অন্তত ৪০।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৩ মে র্যাব গঠনের পর এভাবে ব্যাপকভাবে ক্রসফায়ার শুরু হয়। তখন আওয়ামী লীগ এর সমালোচনা করে। আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকে সে সময়ে বিএনপি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করে।
তবে এখন বিএনপি এই ‘বন্দুকযুদ্ধকে’ ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ আখ্যা দিয়ে বলছে, এভাবে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়।
তবে মাদকবিরোধী অভিযানে হতাহতের ঘটনাগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ মানছেন না কাদের। বলেন, ‘আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করি না। সেটা ভিন্ন জিনিস। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট আছে, তাদের সঙ্গে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রয়েছে। যখন পুলিশ তাদের ধরতে যায় তখন গোলাগুলিতে এনকাউন্টার হয়।’
‘এনকাউন্টার তো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নয়। কারণ এখানে শুধু এক পক্ষের হাতে অস্ত্র নাই, অস্ত্র দুইপক্ষের হাতেই রয়েছে।’
বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কি কোনো রাজনৈতিক সভায় প্রতিপক্ষ গালিগালাজ ছাড়া একটা কথা বলেছেন? মাদক, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেন নাই। তাই এ বিষয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নাই।’
‘মাদকের যে ভয়ঙ্কর অবস্থা আজকে এসেছে, আমরা যদি সকলেই (সকল রাজনৈতিক দল) এতদিন সোচ্চার থাকতাম তাহলে এ অবস্থা আসত না।’
দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ক্রসফায়ারকে সমর্থন করে কি না, জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘ক্রসফায়ারকে আমরা সমর্থন করি না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যে অভিযান হচ্ছে তাকে সমর্থন করি।’
মাদকের সাথে একজন সংসদ সদস্য জড়িত সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘কেবল আবদুর রহমান বদি না, প্রমাণ পেলে আরও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।’