বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। তিনি তৃতীয়বারের মত এই দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬৫ সালের জানুয়ারি মাসে জন্ম নেয়া পটুয়াখালীর সন্তান আফজাল হোসেন পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়, পটুয়াখালী সরকারী কলেজ এবং অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল ছাত্র সংসদে ভিপি’র দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৯ সালে। ১৯৯৯ থেকে পরপর ২ মেয়াদে ৬ বছর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য। আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কার্যক্রম, আগামী নির্বাচন, সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন পলিটিক্সনিউজের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলকের সাথে। আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল
পলিটিক্সনিউজঃ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে টানা তৃতীয় বারের মত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কি কাজ করছেন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আফজাল হোসেনঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো একটি প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠনে আমি পরপর তিনবার তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি এবং এর জন্য আমি আমার দলের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেক পদের জন্য নির্দিষ্ট কাজের নির্দেশনা দেয়া আছে। তথ্য ও গবেষণা বিভাগ থেকে আমরা সে কাজগুলো করে আসছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি মাসিক পত্রিকা আছে, “উত্তরণ”। এটি প্রকাশনার সাথে আমি সম্পৃক্ত। দলের বিভিন্ন সময় যে প্রকাশনাগুলো হয় আমরা সেগুলোর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের দলের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আমরা প্রকাশনা করি। আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে আমার সম্পাদনায় বড় আকারে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছি।
গত তিন কাউন্সিলে সামগ্রিক প্রকাশনার কাজের সাথে তথ্য ও গবেষণা সেল জড়িত ছিল এবং আমি গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এবার গঠনতন্ত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে এবং সে পরিবর্তনের সাথে কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
এছাড়া আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনলাইনে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার হয় তার জবাব দেয়ার জন্য আমরা অনলাইনে কাজ করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রচারণা গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
আমাদের তথ্য ও গবেষণা বিভাগের একটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সেই উপকমিটিতে বিভিন্ন বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ, তাদেরকে সম্পৃক্ত করেছি। নিয়মিত তাদের সাথে বৈঠক করি। ইতিমধ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উল্লেখযোগ্য ভাষণ পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করেছি। আমরা ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সেমিনার আয়োজন করেছি। বঙ্গবন্ধু সেটালাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ উপলক্ষে “মহাকাশে বাংলাদেশ” নামে পুস্তিকা বের করেছি।
আমাদের হাতে বেশ কিছু প্রকাশনা আছে যা শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। আওয়ামীলীগের ৬৮ বছরের রাজনীতির ইতিহাসে আমারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যেমন কৃতজ্ঞ , তেমনিভাবে আওয়ামীলীগের দীর্ঘ সংগ্রামের সারথি ছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। পিছনে থেকে তিনি কিভাবে কাজ করেছেন, তা নিয়ে আমরা একটি প্রকাশনা করব। এভাবে আমরা সংগঠনের প্রাত্যহিক কাজকর্ম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
পলিটিক্সনিউজঃ সিআরআই’র(আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) সাথে আপনাদের কাজের সংযোগ আছে?
আফজাল হোসেনঃ সিআরআই’র কয়েকজন সদস্য আমাদের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটিতে আছে। যেহেতু তাদের কাজের সাথে আমাদের বৈপরীত্য নেই, আমরা কোন কাজে সহযোগিতা চাইলে তারা হাত বাড়িয়ে দেয়। কিছুদিন আগে আমাদের তথ্য ও গবেষণা বিভাগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়ে একটি কর্মশালা আয়োজন করেছি এবং সেখানে সিআরআই’র পক্ষ থেকে ভিডিওচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে।
পলিটিক্সনিউজঃ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে তিনবার চিনে গিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন দেশেও গিয়েছেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে চীন ও অন্যান্য দেশের মনোভাব কেমন?
আফজাল হোসেনঃ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করছে। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার এবং বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৩ ও ১৯৫৭ সালে চীনে গিয়েছিলেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাথে আমাদের পার্টির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি আমাদেরকে বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ জানায় এবং আমরাও তাদের আমন্ত্রণ জানাই। আমাদের সর্বশেষ ভিজিটে রোহিঙ্গা একটি বড় ইস্যু ছিল। এই বিষয়ে কথা বলতে আমরা সেখানে না গেলেও দ্বিপাক্ষিক আলাপ আলোচনায় আমরা বিষয়টা তুলেছিলাম এবং চীনের পক্ষ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিলাম। আমি মালয়েশিয়ায় ক্ষমতাসীন দলের আমন্ত্রণে তাদের সম্মেলনে দুবার আওয়ামীলীগের প্রতিনিধিত্ব করেছি।
পলিটিক্সনিউজঃ আন্তর্জাতিক অঙ্গন এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আওয়ামীলীগের জন্য কি চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন?
আফজাল হোসেনঃ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মধ্যে একটি সেতুবন্ধনের কাজ করতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সকল দেশের সাথে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক আছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রের পরিধি এখন অনেক বেশি।
আওয়ামীলীগের পথ চলা শুরু থেকে কখনই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করি এবং জয়ী হই। বিএনপি-জামাত জোট বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশ এখন শান্তির বাংলাদেশে পরিণতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে ইতিমধ্যে সফল হয়েছেন।
আমাদের কাছে রাজনৈতিক শত্রুতা বা বিরোধিতা বড় বিষয় না। আমাদের বড় শত্রু দারিদ্র। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে দারিদ্রকে আমরা বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করতে চাই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো। দেশের মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব এখন বাংলাদের উপর আস্থা রাখে। ইনশাল্লাহ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সক্ষম হবো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে পাবো। প্রধানমন্ত্রী দূরদৃষ্টি নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। তরুণ প্রজন্মের জন্য তিনি স্বপ্ন দেখেন। তাই তিনি একটা ভিশন ঘোষণা করেছেন। নতুন প্রজন্ম একটি উন্নত দেশ পাবে এ লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই দেশে অনেক বাধা আছে। সেই বাধা গুলোকে অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো সেই বিশ্বাস আমাদের আছে।
পলিটিক্সনিউজঃ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপি’র অনেকগুলো দাবি আছে। বিএনপি বলছে, সেগুলো পূরণ না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। এই বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন?
আফজাল হোসেনঃ বিএনপি সব সময় নেতিবাচক রাজনীতি করে। তাই বিএনপি আজ স্বাভাবিক রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আজকে বাংলাদেশে বিএনপির ভাবমূর্তি এতই শূন্যর কোটায় নেমে এসেছে যে, দেশের মাটিতেই শুধু না কানাডার আদালত পর্যন্ত বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। সন্ত্রাসী দল হিসেবে বিএনপিকে আখ্যায়িত করার যথেষ্ট কারণ আছে। এ দলটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রকে ব্যাহত করার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়, তারা মানুষ হত্যা করে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। সাধারণ মানুষ হত্যা করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের ইতিহাস বাংলাদেশে খুব একটা নেই। কিন্তু বিএনপি সেই কাজটি করেছে। নির্বাচন ঠেকানোর নামে তারা ২৩১ জন মানুষকে হত্যা করেছে, কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি অপরাধ প্রবণ রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। বিএনপি নামক দলটি অতীতে নির্বাচন ঠেকানোর নামে যা করেছে , ভবিষ্যতেও যদি তা করে দেশের জনগণ সেটি কখনোই মেনে নিবে না। দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে সকল দল অংশগ্রহণ করবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। তবে কেউ যদি নির্বাচন থেকে সরেও দাঁড়ায় তারপরও নির্বাচন বাংলাদেশে হবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল একটি না, অনেক গুলো রাজনৈতিক দল আছে। তারপরও আমাদের প্রত্যাশা সকল দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে, সেটা আমাদের সকলেরই প্রত্যাশা ।
আমরা সকলেই জানি গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা অনেক চেষ্টা করেছেন। বিএনপি নেত্রীকে ফোন করেছিলেন। সেই নেত্রীর ভৎসনাও শুনেছেন। তার সন্তানের লাশ দেখার জন্য বাড়ীতে ছুটে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি, দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারের মন্ত্রীপরিষদে তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছিল। তারা তা গ্রহণ করেনি। তারা ভেবেছিল ভিন্ন পন্থায় হত্যা, সন্ত্রাস , জ্বালাও পোড়াও করে তারা ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু মানুষ সেটা প্রত্যাখ্যান করেছে। সর্বোপরি সব দিক থেকে বিএনপি ব্যর্থ রাজনৈতিক দল, তারা আন্দোলনে ব্যর্থ, সরকার পরিচালনায় ব্যর্থ। গতিশীল উন্নয়নের এই দেশে এই ব্যর্থ রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত করুক, এটা দেশের মানুষ কোনভাবেই চাইবে না।
পলিটিক্সনিউজঃ আপনার নির্বাচনী আসন পটুয়াখালী-১ এ শরিক দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আছেন। আওয়ামীলীগের এমপি না থাকায় আওয়ামীলীগের কাজ করার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে কিনা?
আফজাল হোসেনঃ ঐতিহ্যগতভাবে পটুয়াখালী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের জায়গা। মানুষ এখানে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে অভ্যস্ত। ১৯৭৯ সালে সেই সামরিক শাসনের দুর্দিনেও পটুয়াখালীতে নৌকা মার্কার প্রার্থী বিজয় অর্জন করেছিল। সব সময় সুষ্ঠ নির্বাচনে পটুয়াখালীতে আমরা বিজয়ী হই। গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিলো, তারা নির্বাচিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে অন্য দলের সংসদ সদস্য থাকয় এখানের আওয়ামী লীগের চাওয়া পাওয়া ও জনগণের সুযোগ সুবিধা পেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এই কষ্ট পটুয়াখালীবাসির আছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা এই দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য যা করেছেন অতীতের কোন সরকার তা করেনি। পায়রা পোর্টের মত বৃহৎ কর্মযজ্ঞ এখানে হচ্ছে , লেবুখালি ব্রিজ থেকে শুরু করে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল সেতু হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিং ষ্টেশন হয়েছে, মেডিকেল কলেজ হয়েছে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। এই যে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ পটুয়াখালীকে ঘিরে হচ্ছে, এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এলাকাবাসীর দাবী হিসেবে এখানে আর অন্য কোন দলের প্রার্থী দিবেন না, নৌকা মার্কার আওয়ামীলীগের প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিবেন।
পলিটিক্সনিউজঃ আপনার নির্বাচনী আসন পটুয়াখালী ১ নিয়ে আপনার নির্বাচনী ভাবনা, কর্মপরিকল্পনা কি?
আফজাল হোসেনঃ আমার জন্ম, বেড়ে উঠা পটুয়াখালীতে। পটুয়াখালীর মানুষের জীবনমান সম্পর্কে আমার পরিপূর্ণ ধারণা রয়েছে। এ এলাকা নিয়ে আমার দীর্ঘ স্বপ্ন রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা পটুয়াখালীতে যে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, সেই উন্নয়নের কর্মী হিসেবে আমি এলাকায় একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করতে চাই। আমার আগ্রহের কথা আমি নেত্রীকে বলেছি। আমি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। পটুয়াখালী একটি শান্তির জনপদ। এই শান্তির জনপদ নষ্ট করতে ইতিমধ্যে সন্ত্রাস মাদক দখলদারির মত কিছু খারাপ দিক পটুয়াখালীতে ঢুকে পড়েছে। অন্য দলের ব্যক্তি এমপি হওয়ায় সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সম্পৃক্ত হতে পারছে না। এই জনপদকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শর শক্তিশালী ঘাটি হিসেবে আমরা পরিণত করতে চাই। আমার স্বপ্ন এই জনপদকে বঙ্গবন্ধুর কন্যা যে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে এসেছেন, সে উন্নয়নের ধারাকে অক্ষুণ্ণ রেখে যুবসমাজের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে, পর্যটন শিল্পকে উন্নত করে একটি শান্তিময়, সন্ত্রাস মাদক মুক্ত, শিক্ষিত, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য আমার জায়গা থেকে আমি নিরন্তর কাজ করে যাবো।
পলিটিক্সনিউজঃ পটুয়াখালী ১ থেকে অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন। মনোনয়ন নিয়ে কতটা আশাবাদী?
আফজাল হোসেনঃ আওয়ামীলীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এই দলে অনেকেই মনোনয়ন চাইতে পারে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার পূর্ণাঙ্গ তথ্য আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এলাকায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি, স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। যেহেতু এলাকায় দলীয় এমপি নেই, তাই এলাকার মানুষের নানা অভাব অভিযোগ শুনে সেগুলো মেটানোর চেষ্টা করছি। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমি মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। আমি এলাকায় গেলে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে। আমার একটা গ্রাম পর্যায়ের মিটিংয়েও হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে গনজোয়ার সৃষ্টি হয়। আগামী নির্বাচনে মানুষ পরিবর্তন চায়। জনতার শক্তিকেই আমি সবচেয়ে বড় শক্তি মনে করি। জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করতে যেয়ে আমি যে সাহস সঞ্চয় করেছি, তাদের যে সমর্থন পেয়েছি, সে শক্তি নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমি মনে করি। আমি বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাকে মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন পেলে ইনশাল্লাহ এ আসনটি আমি নেত্রীকে উপহার দিতে পারবো, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারবো।