‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ভোটের বছরে চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, যা বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৯৩ হাজার কোটি টাকা বেশি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দশম সংসদের ২১তম অধিবেশনে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এ কথা জানান।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তুষ্টিকেই মূল লক্ষ্য ধরে সর্বকালের রেকর্ড বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতির পরও সামনের অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য বিশাল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য তিনি মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা করেছেন।
জানা গেছে, এবারের বাজেটে এনবিআরকে ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ককর থেকে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা, এনবিআর-বহির্ভূত কর ব্যবস্থা থেকে ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা এবং কর ছাড়া প্রাপ্তি— যেমন টোল, সরকারি হাসপাতালের ফিসহ অন্যান্য উৎস থেকে ৩৩ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা আদায়ের ছক তৈরি করেছেন।
এনবিআরকে দেওয়া ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় ধরা হয়েছে ভ্যাট থেকে।
এ খাত থেকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ভ্যাট বাবদ ৮৩ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আদায় হয়েছে ৫৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।
বাজেটে আয়ের দ্বিতীয় খাত হিসেবে আয়কর আদায়ের জন্য ৯৭ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ খাতে আদায় ৪৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটে সবচেয়ে কম চাপ রেখেছেন আমদানি শুল্ক খাতে। এদিকে, বাজেটে দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় থাকা সব ধরণের ভাতার পরিমাণই বাড়ানো হয়েছে।
কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসৃজনের পাশাপাশি দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হতে পারে এ বাজেটে।