বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ ও ভুয়া তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের মামলা দুটি দ্রুত নিষ্পত্তি ও জামিনের বিষয়ে নিম্ন আদালতের প্রতি হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
২৫ জুন, সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদেশের বিষয়টি জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান। ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি ডিসমিস করেছেন।’
২৮ মে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ ও ভুয়া তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের মামলা দুটি দ্রুত নিষ্পত্তি ও জামিনের বিষয়ে নিম্ন আদালতের প্রতি নির্দেশনা দেন।
১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ভুয়া তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালন করছেন—এমন অভিযোগ এনে ২০১৬ সালে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গাজী জহিরুল হক বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন।
দণ্ডবিধির ১৯৮ ধারা উল্লেখ করে মামলাটি করেন এই সাংবাদিক। শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট ইস্যু) জারি করেন আদালত।
পরে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল জামিন আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেদিন আবেদনের শুনানি না করে ১৫ মে পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন আদালত। এ দিনও আদালত খালেদা জিয়ার আবেদনের আদেশ দেয়নি, পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ জুলাই দিন নির্ধারণ করে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ রানা জানান, হয় জামিন দিতে হবে, না-হয় আবেদনটি খারিজ করে দিতে হবে। কিন্তু আদালত তা না করে বিলম্ব করছে। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশঙ্কা করছেন খালেদা জিয়া। এ জন্য তারা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছিলেন।
বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী মানহানির অভিযোগ এনে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট) আদালতে অন্য একটি মামলা করেন ২০১৬ সালে।
এজাহারে এ বি সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, ২০০১ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের নেতাদের এমপি-মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।এতে জাতির মানহানি হয়েছে।
এ মামলায় বিচারক সাব্বির আহসান চৌধুরী চলতি বছরের ১২ এপ্রিল গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেনট ইস্যু) জারি করেন। এর তিন দিন পর ১৫ এপ্রিল আদালতে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। সেটি শুনানি না করে আদালত পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দেওয়ার পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।