ব্যাংকিং খাত সংস্কারে জুলাইয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মঙ্গলবার (২৬ জুন) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক খাত নিয়ে সমালোচনার জবাব যথা সময়ে দেব। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। জুলাইয়ে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসবো।
মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের বিষয়ে সবচেয়ে বড় অভিযোগ খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া। এ ব্যাপারে কিছু করতে হবে। ব্যাংকের লুটপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, লুটপাত মানে ব্যাংকের সম্পদ পরিচালকরা নিয়ে নিচ্ছেন। এমনটি হচ্ছে না। তবে এ ক্ষেত্রে একটা খারাপ দিক রয়েছে। সেটি হচ্ছে এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালকদের সঙ্গে সমঝোতা করে ঋণ নিয়ে নিচ্ছেন।
‘আমি এক ব্যাংকের পরিচালক হয়ে অন্য ব্যাংক থেকে কিছু কনফ্লিক্ট ইস্যু থাকা সত্ত্বেও ঋণ নিয়ে নিচ্ছি। এসব বিষয়ে জুলাইয়ের মধ্যে কিছু একটা করবো। এ বিষয়ে আমারা মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছি। কিন্তু এ বিষয়ে স্টক হোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাই জুলাই পর্যন্ত সময় লাগবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের (ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করা) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে উজাড় হচ্ছে ব্যাংক খাত। অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটে ডুবে থাকা এ খাত নিয়ে ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতি যতটা এগিয়েছে, ঠিক ততটা পিছিয়েছে ব্যাংক খাত। এ কারণে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য যে পরিমাণ বেসরকারি বিনিয়োগ দরকার, তা জোগান দেয়ার সামর্থ্য হারাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ খাতটি।
অর্থনীতিবিদ, ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, যে কোনো দেশের ব্যবসা-বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাংকগুলোর মূল ভূমিকায় থাকে। কিন্তু দেশের ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থা সেই ভার বহনে সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।