বড় কোন সহিংসতা ছাড়াই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন এবং সুনিশ্চিত বিজয়ের পথে। গাজীপুর সিটিতে দলীয় প্রতীকে এবারই প্রথমবারের মতো মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এতে স্পষ্টভাবে ছিল জাতীয় রাজনীতির ছোঁয়া।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জেলে থাকায় বিএনপি’র নির্বাচন মনিটরিং বা পরিচালনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। সার্বিকভাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন পরিচালনা, নির্দেশনা, মনিটরিং ও নীতিনির্ধারণী বিষয়ে জড়িত ছিলেন। প্রাপ্ত ফলাফল এবং এ পরাজয় বিএনপি কিভাবে দেখছে সে বিষয়ে জানার জন্য আমরা যোগাযোগ করেছিলাম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আবু সায়েমের সাথে। আমাদেরকে দেওয়া তার সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলাফলে বিএনপি’র চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে এবং সুনিশ্চিত বিজয়ের পথে। নৌকার কাছে ধানের শীষের এই পরাজয়ে আপনাদের কী মন্তব্য?
ব্যারিস্টার সায়েম: প্রথমত, আদর্শিক রাজনীতির পরিচ্ছন্ন লড়াইয়ে ধানের শীষ কখনোই নৌকার কাছে পরাজিত হয়নি। কখনো হবেও না। ভোট ডাকাতির রাজনীতি অবশ্য ভিন্ন বিষয়। গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে তাই আলাদাভাবে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার গত সাড়ে নয় বছরে নির্বাচন নামক বনেদি প্রতিষ্ঠানটিকেই পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলেছে। প্রতারণামূলক নির্বাচনের ইতিহাস রচনায় গাজীপুর তাদের জন্য আরও একটি আনন্দদায়ক মাইলফলক মাত্র।
তাহলে আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন কেনো?
ব্যারিস্টার সায়েম: দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের ত্রাতা হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব রয়েছে নির্বাচনব্যবস্থাকে সমূলে বিলীন হতে না দেওয়া। আমাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশাও তাই। সে কারণে ভোট নিয়ে সরকারের জবরদস্তিমূলক আচরণ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকা সত্ত্বেও আমরা স্থানীয় নির্বাচনসমূহ বয়কট করিনি। এটি দায়িত্বশীল রাজনীতির এক নান্দনিক উদাহরণ।
তাহলে কি শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় নির্বাচনে আপনাদের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে?
ব্যারিস্টার সায়েম: জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একেবারেই দুটো ভিন্ন প্ল্যাটফরম। সেগুলো থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক অর্জনও আসে ভিন্ন মাত্রায়। বাস্তবসম্মত কারণেই জাতীয় নির্বাচন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা অনড়।
তবে কি গাজীপুর নির্বাচনের ফলাফল বিএনপি মেনে নিচ্ছে?
ব্যারিস্টার সায়েম: সেটার কি আদৌ কোন সুযোগ আছে? আপনি যদি এতবড় প্রহসনমূলক একটি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেন, তাহলে গণতন্ত্রের প্রতি আপনারতো আর কোন দায়বদ্ধতা থাকলো না।
গাজীপুর নির্বাচনের পর জনগণের কাছে আপনাদের মেসেজ কী?
ব্যারিস্টার সায়েম: বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।