দেশের চলমান জাতীয় ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, ‘দেশের অবস্থা আজ ভীষণ খারাপ। ওষুধ দিলেও দেশ নামের এই রোগীকে বাঁচানো যাবে না। অথচ সরকার উন্নয়নের বুলিতে মুখে ফেনা তুলছে। সরকারের কথা শুনে দেশের মানুষ এখন হাসে। দেশবাসী খুব ভালো করে জেনে গেছে- ভোটারবিহীন বর্তমান মহাজোট সরকার দেশে মহালুট চালাচ্ছে।’
বিনা ভোটের সরকারের কথা কেউ শোনে না- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিনা ভোটে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাই আজ আর তাদের কথা কেউ শোনে না। বাস মালিক সমিতিও সরকারের কথা শোনে না। যার কারণে গণপরিবহনে নৈরাজ্য চলছে।’
মঙ্গলবার (৩ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণসংস্কৃতি দল বাগসদ-এর উদ্যোগে গণপরিবহন খাতে বিরাজমান চরম নৈরাজ্য এবং দেশজুড়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক ভোট লুটের প্রতিবাদে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রিটিশ আমলের বাস এখন ঢাকায় চলে অভিযোগ করে রব আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরের যানজট অর্ধেক কমে যাবে যদি ট্রাফিক সিস্টেম ঠিক করা হয়। যেখানে দুটি রাস্তা আছে সেখানে রিকশা-ভ্যান, পিকআপ, ট্রাক চলবে। আর দ্রুতগামীগুলো ডানে চলবে। কিন্তু সবখানে উল্টোপাল্টাভাবে গাড়ি চলাচলের কারণে আজ এত যানজট।’
ক্ষমতাসীনদের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি করে রব বলেন, ‘সরকার বলে দেশের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে! খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে পুলিশ ও বিজিবি এবং তাদের গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে দরজা আটকে দিয়ে আসতে আসতে সিল মেরেছে। কোনও খুনখারাপি হয়নি! নির্বাচন তো শান্তিপূর্ণ হয়েছে!’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও একবারে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বারবার পিছিয়ে তাঁর প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। এর পরিণতি ভাল হবে না। বেগম জিয়া আজীবন জেলে থাকবেন না। তিনি বেরিয়ে আসবেন। একদিন ওই জায়গায় (কারাগারে) আপনাদেরকে যেতে হবে। সেইদিন বেশি দূরে নয়। আমরা মাঠে নামলেই জনগণ আপনাদেরকে দেশছাড়া করবে।’
কোটা আন্দোলন নিয়ে রব বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে ১৬শ’ বছর পর্যন্ত কি কোটা থাকবে? তারা একটি ন্যায্য আন্দোলন করছে। আর সরকার তাদের মেরে রক্তাক্ত করছে। এটাই কি স্বাধীন দেশ?’
কোটার সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে তা পাকিস্তান আমলের নিপীড়নকেও ছাড়িয়ে গেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘তারা সংস্কার চেয়েছে। কিন্তু আপনি বাতিল করে দিলেন। আবার বলছেন কোটা থাকবে। এখন তাদের ওপরে আপনার গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা যেভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন করেছে পাকিস্তান আমলেও এভাবে নির্যাতন করা হয়নি।’
এসময় আরও বক্তব্য দেন- গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারার সহ-সভাপতি শাহ আহমেদ বাদল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মো: আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।