আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশের জন্য গর্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে স্যাটেলাইটটির পুরো সিস্টেমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হবে। প্রকল্প সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্পের পরিচালক মো. মেসবাহুজ্জামান বলেন, স্যাটেলাইটটির ফুল সিস্টেম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এখন পর্যন্ত কোনও ত্রুটি পাওয়া যায়নি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হবে বলে আশা করছি। এরপরই বাণিজ্যিক ব্যবহারে যাবো।
গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে মহাকাশ পানে তীব্র গতিতে ছুটে যায় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণের ১০ দিন পর তার নিজস্ব অবস্থানে (অরবিট স্লট) পৌঁছেছে। এখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কাজ করা শুরু করেছে।
ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের কাছ থেকে কেনা হলেও এটি পরিচালিত হবে গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে। এর জন্য মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের একটি প্রতিনিধি দলকে প্রশিক্ষিত করে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে মূল তত্ত্বাবধানে প্রথম তিন বছর সহায়তা করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্যাটেলাইটটি প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় একবার পৃথিবী পরিক্রমণ করবে।
বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্যাটেলাইট তার অবস্থান নিয়েছে এবং স্বাভাবিকভাবেই কাজ শুরু করেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সম্পর্কে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের জাতীয় গর্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। এটি সফলভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয় এখন পর্যন্ত এখানে এক চুল পরিমাণ ত্রুটি আমরা পাইনি।
এদিকে দেশের প্রথম এই কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহারে প্রথমবারের মতো নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিসই করেছে বিসিএসসিএল। এই চুক্তির মাধ্যমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার অধীনস্থ বন্দর, ফেরিঘাট, জাহাজ ও অন্যান্য স্থাপনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া হবে।
প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই স্যাটেলাইট প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
সরকার আশা করছে, এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের। সেই সঙ্গে নেপাল, ভুটানের মতো দেশের কাছে ভাড়া দিয়ে বছরে বড় অংকের টাকা অর্জন করা যাবে।