দেশের তিন সিটিতে আসন্ন নির্বাচনে যেন সরকারিভাবে কোনো হস্তক্ষেপ করা না হয় সেদিকে কড়া দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যদি কেউ এই ধরনের হস্তক্ষেপ করে তাহলে নির্বাচন কমিশন তো পদক্ষেপ নেবেই, পাশাপাশি সরকারও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
শনিবার (২১ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত গণসংবর্ধনা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
রোববার (২২ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী বলেন, সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ছাত্রলীগ সদস্যরা যেন কোনো বাড়াবাড়ি না করেন সে বিষয়ে হুঁশিয়ারি করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যেন কোনো বাড়াবাড়ির খবর না আসে এবং তারা যেন নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন না করে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলগুলো সভাসমাবেশ করবে এইটা স্বাভাবিক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমাবেশের নামে কেউ নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা করলে অবশ্যই বাঁধা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংলাপের প্রয়োজন নেই। এর আগে তো নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন সংলাপ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের প্রয়োজন বোধ করছি না।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের জন্য যে শর্ত দিয়েছে, কোনো শর্ত দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। সাংবিধানিকভাবে নিয়ম কানুন মেনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনেও বিএনপি আসবে কি, আসবে না সেইটা আমাদের দেখার বিষয় না। নির্বাচনে বিএনপি আসবে। সেটা তো তাদেরই প্রয়োজনে আসতে হবে না। নির্বাচন তো সরকারের অনুদান নয়। নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা তাদের অধিকার। তারা না আসলে কী গণতন্ত্র থেমে থাকবে? অবশ্যই না।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে বিএনপি একেক সময় একেক কথা বলছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তারা ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেছে। এখনো সেই ষড়যন্ত্র চলছে। এখন তারা বলছেন খালেদা জিয়া ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তাদের এই বক্তব্যের মধ্যেই ষড়যন্ত্রের আভাস খুঁজে পাচ্ছি।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে সরকারের কাঠামো ছোট হয়ে যাবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সঠিকভাবে আচরণবিধি মেনেই সেই সরকার কাজ করবে।
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপি থাকবে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সে সুযোগ নেই। একসময় তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে তারা রাাজি হয় নি। তাই এখন পার্লামেন্টে যারা প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদেরকে নিয়েই সরকার গঠন করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ওবায়দুল কাদের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ইতিহাসে এই প্রথম এতো বড় একটি অনুষ্ঠানে একজনই বক্তা ছিলেন, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি শুধু মানপত্রটা পাঠ করেছি। এই শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে আওয়ামী লীগ সংগঠিত, সুশৃঙ্খল, স্মার্ট এবং মডার্ন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি শনিবারই করা হয়েছে। মিছিলের পাশে পরিবহন চলতে পারে কি না সেইদিকেও আমাদের নজর ছিল। তবে তারপরেও দুই একটি ঘটনা ঘটে থাকলে সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’