বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর ‘দুর্বৃত্তদের’ হামলার জন্য সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘‘এই হামলা বাংলাদেশের জন্য প্রচণ্ড রকম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’’
রোববার (০৫ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘একটি খবর আমাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সুজনের পরিচালক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজে গিয়েছিলেন। বার্নিকাট বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছেন। সেই কারণে তার বন্ধু-বান্ধব তাকে ফেয়ারওয়েল দিচ্ছেন। গত রাতে বদিউল আলম মজুমদার তার জন্য ডিনারের ব্যবস্থা করেছিলেন।’
‘এই ডিনারের আগে থেকেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেখানে জড়ো হয়েছিল এবং দরজায় ধাক্কা-ধাক্কি করছিল। ডিনার শেষে বের হবার পর তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়ি আক্রমণ করেছে, গাড়িতে ইট-পাটকেল মেরেছে, পাথর মেরেছে। এতে ড্রাইভার ও বদিউল আলম মজুমদারের ছেলে আহত হয়েছেন। বার্নিকাটের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের কারণে তিনি রক্ষা পেয়েছেন’’— বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর আক্রমণ হওয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ হওয়ার শামিল। এই ঘটনা বাংলাদেশের ভাবমূর্তী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচণ্ড রকম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’
‘‘আমরা তার ওপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি’’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রায় ৭ জন ছাত্রীকে আওয়ামী লীগ অফিসে শ্লীতাহানী করা হয়:
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি বেশ কিছু ছাত্র/ছাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে গেছে। শোনা গেছে— এর সত্যতা আমরা কনফার্ম করতে পারিনি। গতকাল ধানমন্ডিতে চার জন শিক্ষার্থী মারা গেছ এবং এএফপি বলছে প্রায় ১ শ’র মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’
’‘বলা হচ্ছে— আমরা এটার সত্যতা যাচাই করতে পারিনি এখনো। প্রায় ৭ জন ছাত্রীকে আওয়ামী লীগ অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়, শ্লীতাহানী করা হয়। আমরা পরবর্তী পর্যায়ে শুনেছি যে, সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এটা হচ্ছে অসমর্থিত খবর’’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘‘গতকাল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ধানমন্ডিতে কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীদের ওপরে ধারাল অস্ত্র, আগ্নেয় অস্ত্র নিয়ে, হেলমেট পরে একেবারে যুদ্ধাংদেহী অবস্থায় আক্রমণ চালায়। এই সমস্ত অসহায় ছাত্র/ছাত্রীরা আশ্রয় নিতে গেলেও পুলিশরাা তাদের আশ্রয় দেয়নি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদেরকে প্রচণ্ড রকমভাবে আহত করেছে।’’
’‘একজন ছাত্রকে নিয়ে তারা (ছাত্রলীগ) সেই সময় বলিয়েছে, আওয়ামী লীগ অফিসের সব জায়গা সে দেখেছে। ভেতরে কিছু নেই। একদম পরিষ্কার। আজকে স্যোসাল মিডিয়াতে বেড়িয়েছে, এই ছেলেটি ছাত্রলীগের নিউমার্কেট শাখার একজন সদস্য। এটা স্যোসাল মিডিয়াতে আসছে। আমার কাছে কিন্তু এটার কোনো সমর্থিত সোর্স নেই’’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক নঞ্জুর ইসলাম মঞ্জু, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দীন আলম, আসাদুল করীম শাহীন প্রমুখ।