রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা হামলা করেছে , সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ একাধিক টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ।
হামলা থেকে বাঁচতে দেড় শতাধিক আন্দোলনকারীরা পপুলার হাসপাতালে আশ্রয় নেয়। সেখানেও ঢুকে আন্দোলনকারীদের মারধর করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল অজ্ঞাত পরিচয় যুবক ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে হকিস্টিক হাতে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল আরোহীদের দাঁড় করায় এবং তাদের হেলমেট নিয়ে নেয়। ওই দলে আগে থেকেই হেলমেট পড়ে অনেকেই ছিল। তাদেরকে রোড ডিভাইডার থেকে লোহার পাইপ খুলে নিতে দেখা গেছে। এছাড়া হামলাকারীর অনেককে নীলক্ষেত মোড়ে লাঠি হাতে দেখা যায়।
হামলাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। হামলাকারীর অনেকে হেলমেট পরা, তাদের হাতে রাম দা, অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে ।
সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে হামলাকারীরা বাধা দেয়। এ সময় বেশ কয়েকজন ফটোসাংবাদিককে মারধর করা হয়।
ল্যাবএইড মোড়ে দেশটিভি, বাংলাভিশনসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমকর্মী ছিলেন। এ সময় তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে ছবি ও ফুটেজ ডিলেট করে দেয় হামলাকারীরা। হামলায় অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ফটো সাংবাদিক এ. এইচ. আহাদ আহত হয়েছেন। তার মাথায় একাধিক সেলাই দেওয়া হয়েছে।
এ সময় নাগরিক টেলিভিশনের একটি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়।
হামলাকারীরা প্রথমে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে অবস্থান নেয়। তাদের প্রতিহত করতে নিউ অ্যালিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
একপর্যায়ে সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগে জড়ো হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা শনিবার শিক্ষার্থীদের হামলার প্রতিবাদে জড়ো হন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এ সময় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয় বুয়েট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এরপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষার্থীরা জিগাতলার দিকে রওয়ানা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লাঠি হাতে কিছু যুবকের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ হয়। হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদেরকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া আহতদের সাতজন গুরুতর জখম হয়েছেন।