খালেদা জিয়ার মুক্তিতে মুক্ত হবে দেশ-জনগণ: রিজভী

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘নির্ভীক’ দেশনেত্রী আখ্যা দিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আজ খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। তাঁকে মুক্ত করতে হবে। কারণ তাঁর মুক্তির মাধ্যমে শুধু একজন ব্যক্তির মুক্তি হবে না, মুক্তি হবে দেশের ও জনগণের।’

রবিবার (১২ আগস্ট) নয়াপল্টন বিএনপির নেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর ৪৯তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এ আয়োজন করে।

সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বের হতে পারি না। সেটা ভাবলে নিজের কাছে নিজেকেই ধিক্কার লাগে।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারের পেটোয়া বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা-নিপীড়নের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘আজকে সারা জাতি অবরুদ্ধ। কচি কচি বাচ্চাদের যেভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছে তাদের রক্তমাখা কেডস ও রক্ত মাখা শার্ট দেখলে কার না হৃদয় ভাঙবে।

অথচ এই ঘটনাও ঘটিয়েছে এই পাষণ্ড সরকার। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের ওপর হেলমেট পরে যারা আক্রমণ করেছে প্রধানমন্ত্রী ‘তাদের’ দেখতে যান, কিন্তু যারা আক্রান্ত হয়েছে সেই স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের দেখতে যান না। এই নিষ্ঠুর দেশে আমরা এখনো বাস করছি। আমরা এখনো কেন ঘর থেকে বের হতে পারি না। কেন আমরা এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের ইট, কাঠ, কংক্রিটের ধূলা উড়িয়ে দাঁড়াতে পারি না। সেটা ভাবলে নিজের কাছে নিজেকেই ধিক্কার লাগে।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুলশানের অফিসে অবরুদ্ধ থাকাবস্থায় কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুসংবাদ শুনতে হয়েছে তাঁকে। তখন তিনি শেখ হাসিনার রক্তচক্ষুর কাছে মাথা নত করেননি। ভয়কে তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। খালেদা জিয়া সেদিন নির্ভীক ছিলেন। এটাই হল খালেদা জিয়ার বৈশিষ্ট্য। এটাই হল তাঁর ঐতিহ্য। এই বৈশিষ্ট্য-ঐতিহ্য নিয়েই তিনি দশকের পর দশক জাতীয়তাবাদের পতাকা, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের পতাকা উড্ডীন রেখে চলেছেন।’

কোকোর স্মৃতিচারণা করে রিজভী বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো নীরবে নিভৃতে চলাফেরা করতেন। সবার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। কোনো কথা বললে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। অত্যন্ত মিতভাষী ও ক্রীড়ামোদী ছিলেন। তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠকও ছিলেন। এই সময় তার পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার কথা নয়। মায়ের ওপর জুলুম দেখেই তিনি পৃথিবী থেকে চলে গেছেন।’

কর্মসূচি: 
আগামী ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তার কারামুক্তি, আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির সিনিয়র নেতারা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন।

দোয়া মাহফিলে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক নূরে আরা সাফা, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের সভানেত্রী পিয়ারা মোস্তফা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভানেত্রী রাজিয়া আলিম ও সাবেক এমপি রওশনারা ফরিদ প্রমুখ।